রণজিৎ ঘোষ, শিলিগুড়ি: বন্দিদের কেউ হঠাৎ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্য শিলিগুড়ির বিশেষ সংশোধনাগার (Siliguri special correctional home) কর্তৃপক্ষের কাছে কোনও অ্যাম্বুল্যান্স (Ambulance) নেই। যার ফলে কর্তৃপক্ষকে প্রচণ্ড সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। বাইরে থেকে অ্যাম্বুল্যান্স নিয়ে এসে রোগীকে নিয়ে যেতে অনেক দেরি হচ্ছে।
আর এর ফলে রোগীর শারীরিক অবস্থা আরও খারাপ হচ্ছে। এসব ক্ষেত্রে বাধ্য হয়ে কয়েদি (Prisoner) পরিবহণের জন্য বড় বাসে রোগীকে চ্যাংদোলা করে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হচ্ছে। সংশোধনাগারের সুপার দীপক সারকি বলেন, ‘এটা আমাদের বড় সমস্যা। কেউ অসুস্থ হলে আমাদের চিন্তা বেড়ে যায়। অনেক বন্দি মাঝেমধ্যেই গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। শ্বাসকষ্ট হলে সঙ্গে সঙ্গে অসুস্থকে অক্সিজেন দিতে হয়। কিন্তু অ্যাম্বুল্যান্স না থাকায় হাসপাতালে পৌঁছানোর আগে আমাদের কিছুই করার থাকে না। একটা সরকারি অ্যাম্বুল্যান্স পেলে ভালো হয়।’
শিলিগুড়ি বিশেষ সংশোধনাগারে ২৫০ জন বন্দিকে রাখার ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু সেখানে বর্তমানে দ্বিগুণ বন্দি রয়েছে। এই বন্দিদের কেউ অসুস্থ হলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার মতো পরিকাঠামো সংশোধনাগারে নেই। সূত্রের খবর, সংশোধনাগারে বন্দিদের রুটিন স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যেতে পুলিশ কমিশনারেটকে প্রতিদিন লিখিতভাবে জানাতে হয়। এর পরেই সেখান থেকে বড় বাস এসে বন্দিদের হাসপাতালে নিয়ে যায়।
কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লেও তাকে হাসপাতালে নেওয়ার জন্য প্রথমে পুলিশ কমিশনারেটকেই জানাতে হয়। সমস্ত প্রক্রিয়া করে আবেদন করার পর মাল্লাগুড়ির পুলিশ কমিশনারেট থেকে গাড়ি আসতে অনেকটা সময় লেগে যায়। বিশেষ করে শহরে যেভাবে যানজট থাকে, তাতে সেই গাড়ি আসতে প্রচুর সময় লাগছে।
এ তো গেল দিনের কথা, মাঝরাতে কেউ গুরুতর অসুস্থ হলে সংশোধনাগার কর্তৃপক্ষ আরও বিপাকে পড়ে। সংশোধনাগারে একজন চুক্তিভিত্তিক চিকিৎসক থাকলেও তিনি ২৪ ঘণ্টা ডিউটিতে থাকেন না।
ফলে প্রাথমিক চিকিৎসাটুকুও দেওয়া সম্ভব হয় না। বাধ্য হয়ে ওই রোগীকে সংশোধনাগারকর্মীরা চ্যাংদোলা করে বন্দিদের নিয়ে যাওয়ার বাসে তোলেন। বাসের সিটে শুইয়েই সেই রোগীকে হাসপাতালে নিতে হয়। কিন্তু বাসে তো আর অ্যাম্বুল্যান্সের পরিকাঠামো থাকে না। সংশোধনাগারে এই ইস্যুতে সমস্যা দিনদিনই বাড়ছে।