সানি সরকার, শিলিগুড়ি: নিশ্চয় মনে আছে টাইটানিক। তেমনভাবেই এখনও মানুষ ভুলতে পারেনি রোজ বা কেটকে। যেমনভাবে কেটের গলায় থাকা ‘হার্ট অফ দ্য ওসান’। সমুদ্রের গভীরে কত যে মণি-মুক্তো রয়েছে, তার হদিস দিতেই হলিউড পরিচালক জেমস ক্যামেরন কেটের গলায় নীলাভ লকেট পড়িয়ে দিয়েছিলেন। সিনেমাটির প্রায় ২৫ বছর পর সমুদ্রের গভীরে পৌঁছে মণি-মুক্তো খুঁজতে চাইছে বিশ্ব। যার জন্য সমুদ্র বিজ্ঞানীদের নিয়ে গঠিত হয়েছে ইন্টারসেশনাল এক্সপার্ট গ্রুপ (আইইজি)। ৩০ জনের ওই গ্রুপে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করবেন শিলিগুড়ির পার্থসারথী অর্থাৎ শিলিগুড়ি বয়েজ হাইস্কুলের প্রাক্তনী এবং আইআইটি খরগপুরের সেন্টার ফর ওসান, রিভার অ্যাটমোস্ফেয়ার অ্যান্ড ল্যান্ড সায়েন্স বিভাগের অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর পার্থসারথী। তিনি বলছেন, ‘বিশ্বের বিশিষ্ট বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ আমার কাছে নিশ্চিতভাবে গর্বের। পাশাপাশি দায়িত্ব আরও বেড়ে গেল। কেননা, আমাদের কাজের মধ্যে দিয়ে শুধু দেশ নয়, বিশ্ব উপকৃত হবে।‘
মহাকাশ চর্চায় এখন মনোযোগী গোটা বিশ্ব। চন্দ্রযানের সাফল্যে বিশ্বের দরবারে বিশেষ জায়গা করে নিয়েছে ভারত। কিন্তু পৃথিবীর মধ্যেই যখন রয়েছে সমুদ্র তখন কেন তার গভীরে আলোকপাত করা হবে না? প্রশ্নটা উঠেছিল অনেক আগেই। জলবায়ুর পরিবর্তনে তা আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। সবচেয়ে বড় বিষয় হল, সমুদ্রের গভীরে থাকা বিভিন্ন ধাতব পদার্থ উদ্ধার সম্ভব হলে তার মধ্য দিয়ে অনেক দেশই উপকৃত হতে পারে। এই কাজের ক্ষেত্রে অর্থাৎ মাইনিংয়ের জন্য ইন্টারন্যাশনাল সিবেড অথরিটি সম্প্রতি ৩০ জনের এক্সপার্ট গ্রুপ তৈরি করেছে। যার মধ্যে তিনটি ভাগে ১০ জন করে বিজ্ঞানীকে রাখা হয়েছে। টক্সিসিটি বিভাগে রয়েছেন শিলিগুড়ি বয়েজ হাইস্কুল এবং উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী পার্থসারথী। অর্থাৎ তাঁর কাজ হবে মাইনিংয়ে ক্ষেত্রে কোনওরকম বিষক্রিয়ার সৃষ্টি হবে কি না, হলে সামুদ্রিক পরিবেশে তার প্রভাব কতটা পড়তে পারে, তা খতিয়ে দেখা এবং এই সংক্রান্ত তথ্য তুলে ধরা আইইজির কাছে। তবে তাঁর কাজ কবে থেকে শুরু হবে তা এখনও নিশ্চিত নয়। পার্থসারথী বলছেন, ‘নিশ্চয় সমস্ত বিজ্ঞানীদের নিয়ে প্রথমে বৈঠক হবে। তারপর পরিকল্পনা করে কাজে হাত দেওয়া হবে। কিছুদিনের মধ্যে সমস্ত কিছু জানতে পারব আশা করছি।‘ এই গর্বের মুহূর্ত উপভোগ করতে বয়েজ স্কুলের পুনর্মিলন উৎসবে যোগ দেবেন বলেও শনিবার জানান। উল্লেখ্য, বিজ্ঞানে বিশেষ অবদানের জন্য ২০১৮ সালে ভাটনাগর পুরস্কার পেয়েছিলেন পার্থসারথী।