শীতলকুচিঃ গত বিধানসভা ভোটে ভোটের লাইনে দুষ্কৃতীদের গুলিতে প্রাণ হারিয়েছিলেন শীতলকুচি ব্লকের পাঠানটুলি গ্রামের আনন্দ বর্মন নামে এক বিজেপি সমর্থক। ঘটনার তিন বছরেও মূল দুই অভিযুক্ত হাকিম মিয়াঁ ও মিঠুন মিয়াঁকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি সিবিআই। যা নিয়ে ক্ষোভ দিনকে দিন বাড়ছে আনন্দ পরিবার সহ পাঠানটুলির বাসিন্দাদের মধ্যে।
আনন্দর ঠাকুরদা মনোরঞ্জন বর্মনের কথায়, ‘সিবিআই কী করছে ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না। অপরাধীরা চোখের সামনে ঘুরে বেড়াচ্ছে। সিবিআই অফিসাররা এক বছর ধরে এলাকায় আসছেন আর ফিরে যাচ্ছেন। সবরকম সহযোগিতা করা হয়েছে সিবিআইকে। এরপরেও ওই দুই অপরাধী গ্রেপ্তার হয়নি।’
উচ্চ আদালতের নির্দেশে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা ভোটদান পর্ব ও ভোট পরবর্তী হিংসাত্মক ঘটনা তদন্তের দায়িত্ব নিয়েছিল সিবিআই। রাজ্যের নানা ঘটনা সহ শীতলকুচির পাঠানটুলির তরুণ আনন্দ খুনের ঘটনারও তদন্ত শুরু করে তারা। তদন্তে নেমে এক বছর ধরে কোচবিহারের গোপালপুর বিএসএফ ক্যাম্পে ঘাঁটি গেড়ে বসেন সিবিআই অফিসাররা। যদিও মূল অভিযুক্তরা আজও অধরা। অভিযুক্তদের সন্ধানে পুরস্কার ঘোষণা করেও লাভ হয়নি।
তবে এই খুনের ঘটনার তদন্তের দায়িত্ব সিবিআইয়ের হাতে যাওয়ার আগে রাজ্য পুলিশ এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছিল। সে জামিন পেয়ে যায় আদালতে। হাকিম, মিঠুন সহ সিবিআই তদন্তে আরও যে পঁাচজন অভিযুক্তর নাম উঠে আসে, তারা হল-করিম মিয়াঁ, বুলু মিয়াঁ, দীনেশ্বর বর্মন, নিত্যানন্দ বর্মন ও সুভাষ বর্মন। এই পাঁচজন গ্রেপ্তার হয়েছে। অভিযুক্তরা এলাকার বাইরে রয়েছে বলে দাবি তদন্তকারী সিবিআই আধিকারিকদের। তাঁদের কথায়, ঘটনার তদন্ত চলছে। আদালত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করার নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্য পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারে। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করতে সবরকম চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে সিবিআই।
বিষয়ট নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের শীতলকুচি ব্লক সভাপতি তপনকুমার গুহ বলেন, ‘বিজেপির নির্দেশে সিবিআই চলছে। আনন্দ খুনের ঘটনায় বিজেপি সেরকম রাজনৈতিক ফায়দা পাবে না, তাই সিবিআইয়ের তৎপরতা কমে গিয়েছে। আমিও চাই কেউ দোষী হলে অবশ্যই তার শাস্তি হোক।’
বিজেপি যুব মোর্চার শীতলকুচি ৫ মণ্ডলের সভাপতি দেবাশিস বর্মনের পালটা বক্তব্য, ‘স্থানীয় পুলিশ তদন্তে সিবিআইকে সহযোগিতা করছে না। তাই অভিযুক্তদের ধরতে দেরি হচ্ছে। সিবিআইয়ের উপর সাধারণ মানুষের ভরসা রয়েছে। উপযুক্ত প্রমাণ সহ তারা অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করবে।’