শিলিগুড়ি: প্রকৃতি এবারে পর্যটকদের একেবারেই বিমূখ করছে না। এখনও পর্যন্ত দু’বার সান্দাকফুতে তুষারপাতের পর এদিন আবার ছাঙ্গুতে তুষারপাত। সপ্তাহ শেষের ছুটির মেজাজ নিতে এখন পাহাড়েই ছুটছেন পর্যটকেরা।
২৩ জানুয়ারি ছুটির পর দুটো দিন ছুটি নিয়ে ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত একেবারে নিশ্চিন্তে সান্দাকফু, ছাঙ্গুতে কাটাতে ওইসব এলাকায় এখন উপচে পড়া ভিড়। অথচ এখন কিন্তু মোটেও পর্যটন মরশুম নয়। মরশুম পড়তে আরও দু’এক মাস বাকি। কিন্তু সান্দাকফুতে দুই দু’বার তুষারপাতের কারণে এই প্রাকৃতিক সৌন্দ্যর্যকে কেউ আর হারাতে চাননা। পর্যটকদের আশা, এবার যেরকম ঠান্ডা পড়েছে তাতে সান্দাকফুতে আরও কয়েকবার তুষারপাত হবে। সেই আশাতেই বাংলা তো বটেই, বাংলার বাইরের পর্যটকেরাও এখন প্রতিদিন সান্দাকফুর দিকে পা বাড়াচ্ছেন। উল্লেখ্য, এদিন ছাঙ্গুর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ০.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও সর্বোচ্চ ৪.২ ডিগ্রি। দার্জিলিং পাহাড়ের এদিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ১০.৬ ডিগ্রি ও সর্বনিম্ন শূন্যের ঘরে।
২৩ জানুয়ারি নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তীতে ছুটি থাকার পর ২৪ ও ২৫ তারিখ অফিস ছুটি নিলেই ব্যাস এরপর আবার তিনদিন ছুটি থাকছে সরকারি অফিসগুলিতে। যার ফলে সপ্তাহ শেষে কদিন পর্যটকেরা পাহাড়ের মনোরম পরিবেশে কাটাতে ছুটে আসছেন। যা দেখে পর্যটন ব্যবসায়ীরাও খুশি। এই মুহুর্তে সান্দাকফুতে যাওয়া কলকাতার পর্যটক দেবাশীষ কর্মকার বলেন, তুষারপাতের আশাতেই এসেছিলাম পরিবার নিয়ে। তবে প্রকৃতি আমাদের বিমূখ করেনি। এই কারণেই সময় পেলেই ছুটে আসি এইসব জায়গায়।’ একই বক্তব্য, যাদবপুরের বাসিন্দা কুমকুম চক্রবর্তীর। তিনি বলেন, ছাঙ্গুতে এদিন তুষারপাত দেখেছি। অসাধারন সেই অনুভুতি। অনেকবার পাহাড়ে এসেছি, কিন্তু কোনওবারই তুষারপাত দেখিনি। এবার যে তা দেখতে পাব তা স্বপ্নেও ভাবিনি।’ এদিকে প্রচন্ড ঠান্ডাকে উপেক্ষা করে যেভাবে পর্যটকরা এই সময়তেও এইসব এলাকায় আসছেন তাতে খুশি পর্যটন ব্যবসায়ীরাও।
হিমালয়ান হসপিটালিটি অ্যান্ড টুরিজম ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের সাধারণ সম্পাদক সম্রাট সান্যালের বক্তব্য, ‘এই সময় সাধারণত এত পর্যটক এখানে আসেন না। কিন্তু এবার তুষারপাত দেখতেই প্রচুর মানুষ এখানে আসছেন।’ ইস্টার্ন হিমালয়ান ট্রাভেল অ্যান্ড টুর অপারেটরস ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি দেবাশীষ মৈত্রের কথায়, ‘প্রচুর পর্যটক পাহাড়ে এই সময় আসার জন্য এখানকার আবহাওয়া সম্পর্কে জানতে চাইছেন। আমরা তাদের পুরো তথ্য জানিয়ে দিচ্ছি। আমাদের মনে হচ্ছে এই সময় যেভাবে তুষারপাত দেখতে মানুষ ভিড় করছেন তাতে আমরা আশাবাদী আগামী একমাস ধরে এই ভিড় থাকবে।’