মেখলিগঞ্জ: মেখলিগঞ্জের বিধায়ক পরেশ অধিকারী (Paresh Chandra Adhikary) কি তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপি (BJP) শিবিরে যোগ দিচ্ছেন? এই প্রশ্নকে ঘিরে কোচবিহারের রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ১৯ জানুয়ারি মেখলিগঞ্জে জনসভা করবেন। ওই সভাতেই বেশ কিছু জনপ্রতিনিধি পদ্ম শিবিরে যোগ দেবেন। ওই সভার দিকে লক্ষ রেখেই পরেশ বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করেছেন বলে চর্চা চলছে।
বিজেপির জলপাইগুড়ি জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক দধিরাম রায় এই দাবিকে সত্যি বলে জানিয়েছেন। দধিরামের কথায়, ‘শুভেন্দু অধিকারীর জনসভায় বিজেপিতে যোগ দিতে চেয়ে পরেশ দলের রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। রাজ্য নেতৃত্ব আমাদের মতামত জানতে চেয়েছে। কিন্তু পরেশের মতো চাকরি চোরকে আমরা দলে নেব না বলে জলপাইগুড়িতে বৈঠকে করে সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের সিদ্ধান্ত জানার পর রাজ্য নেতৃত্ব সহমত জানিয়েছে।’ এবিষয়ে পরেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘ভিত্তিহীন বিষয় নিয়ে গুজব ছড়িয়েছে। আমি তৃণমূল ছাড়ছি না।’
আশ্চর্যের বিষয় হল, পরেশের পদ্ম শিবিরে যোগদানের সম্ভাবনার বিষয়টি ঘাসফুল শিবিরেও সমান আলোচনার বিষয়বস্তু হয়ে দাঁড়িয়েছে। দলের জামালদহের এক প্রাক্তন জনপ্রতিনিধির বক্তব্য, ‘আমি শুভেন্দু অধিকারীর সভায় বিজেপিতে যোগ দেব। পরেশবাবুও বিজেপিতে যোগ দিতে চান।’ তৃণমূল যুব কংগ্রেসের জলপাইগুড়ি জেলার সাধারণ সম্পাদক বাপ্পা মণ্ডল ফেসবুকে লিখেছেন, ‘জেল যাওয়া ঠেকাতে সিবিআইয়ের চার্জশিটে নাম ওঠা পচা আলু বঙ্গ বিজেপিতে যোগ দিতে চাইছে।’ ঠিক কী বোঝাতে চাইছেন বলে বাপ্পাকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, ‘সিবিআইয়ের হাত থেকে বাঁচতে পরেশ বিজেপির সঙ্গে যোগযোগ করেছেন বলে আমাদের কাছে খবর আছে।’ দলের মেখলিগঞ্জ ব্লক সহ সভাপতি আনারুল মহম্মদ বললেন, ‘নিজের স্বার্থে দলবদল করা ওঁর বরাবরের অভ্যাস। তাই পরেশ বিজেপিতে যোগ দিলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। তবে উনি দল ছাড়লে আমাদের দলের কোনও ক্ষতি হবে না।’ একই সুরে দলের সহ সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত সরকার বলেন, ‘গণতান্ত্রিক দেশে যে যাঁর ইচ্ছামতো দল করতে পারেন। পরেশ ইচ্ছা করলে দল ছাড়তেই পারেন।’
বাপ্পা বা আনারুলরা অবশ্য তৃণমূলে পরেশের বিরোধী শিবির হিসেবে পরিচিত। তাই পরেশ-ঘনিষ্ঠ মেখলিগঞ্জ শহর তৃণমূল সভাপতি বিষ্ণুপদ ঘোষ ফেসবুকে লিখেছেন, ‘দলে থেকে দলের ক্ষতি করবার জন্য বেড়ালের মতো মিউ মিউ করবেন না।’ কী উদ্দেশ্যে তাঁর এই পোস্ট বলে তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘দলে থেকেও যাঁরা বিজেপির হয়ে প্রচার করছেন তাঁদের জন্য।’ বিষ্ণুপদ পাশে দাঁড়ালেও সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপির মেখলিগঞ্জ বিধানসভার আহ্বায়ক পবন ভাদানি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন, ‘গ্রেপ্তারি এড়াতে বিজেপির সঙ্গে গোপন যোগাযোগ। মহাশয় বিজেপি আর সিবিআই এক নয়।’