উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: ১৬ জুলাই ফের শুনানি সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)। প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীর চাকরি বাতিল মামলায় মঙ্গলবার একথা জানাল শীর্ষ আদালত। ওইদিন সব পক্ষকে দিতে হবে নোটিশ। হাইকোর্টের চাকরি বাতিলের নির্দেশে আপাতত স্থগিতাদেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। এদিন শুনানির পর সংক্ষিপ্ত রায়ে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় (Dhananjaya Yeshwant Chandrachud) জানান, মূল বিষয় হল, নিয়োগের তালিকা থেকে কি যোগ্য ও অযোগ্য আলাদা করে বাছাই করা সম্ভব? তা যদি সম্ভব হয় তাহলে গোটা নিয়োগ প্রক্রিয়া তথা প্যানেল বাতিল করে দেওয়া ভুল হবে।
এদিন এসএসসি মামলায় (SSC Recruitment Case) দীর্ঘ শুনানির শেষে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় আরও বলেন, ‘সুবিচারের জন্য এই মামলায় দ্রুত শুনানি প্রয়োজন বলে শীর্ষ আদালত মনে করছে। সেই কারণে মামলার পরবর্তী শুনানি দিন ১৬ জুলাই ধার্য করা হচ্ছে।’ সু্প্রিম কোর্ট এদিনের শুনানিতে জানায়, কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ যে নির্দেশ দিয়েছে তার উপর এখনই পুরোপুরি স্থগিতাদেশ দেওয়া হচ্ছে না। তবে অন্তর্বতী স্থগিতাদেশ দেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ ১৬ জুলাই পর্যন্ত আপাতত কারও চাকরি যাচ্ছে না। কাউকে বেতনের টাকা ফেরত দিতে হবে না। তবে ২৫ হাজার ৭৫৩ জনকে মুচলেকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। মুচলেকায় অযোগ্য প্রমাণিত হলে বেতন ফেরত দেওয়ার কথা জানাতে হবে বিতর্কিত চাকরিপ্রাপকদের। শুধু তাই নয়, সুপার নিউমারেরি পোস্ট তৈরির জন্য কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court) রাজ্য মন্ত্রীসভার বিরুদ্ধে যে সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল, তার উপরেও অন্তবর্তী স্থগিতাদেশ রইল।
এদিন সকাল থেকে শুনানি পর্বে সুপ্রিম কোর্টের কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় এসএসসি ও রাজ্য সরকারকে। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় বলেন, “এটা পরিকল্পিত জালিয়াতি। সরকারি চাকরি বর্তমান সময়ে খুবই অপ্রতুল এবং তা সামাজিক নিশ্চয়তার আঙ্গিকে দেখা হয়। নিয়োগ প্রক্রিয়াই যদি কালিমালিপ্ত হয়, তাহলে গোটা ব্যবস্থায় আর অবশিষ্ট কী থাকে? মানুষ আস্থা হারিয়ে ফেলবে। সেটা ফেরাবেন কী করে!”
হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করেন এসএসসির আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত। তিনি সওয়াল করে এক্তিয়ারের বাইরে গিয়ে চাকরি বাতিল করেছে কলকাতা হাইকোর্ট। এরপরই প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন করেন, “ওএমআর শিট এবং স্ক্যান কপিগুলো কি নষ্ট করে ফেলা হয়েছে?” জবাবে আইনজীবী জয়দীপ গুপ্ত বলেন, “হ্যাঁ”। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের প্রশ্ন “এত স্পর্শকাতর একটা বিষয়। তারপরেও আপনারা ওএমআর শিট স্ক্যান করাতে টেন্ডার ডাকেননি কেন?” যার সদুত্তর দিতে পারেননি এসএসসির আইনজীবী। প্রধান বিচারপতি ফের বলেন, “ব্যাপারটা আউটসোর্স করে আপনারা গোটা প্রক্রিয়ার পবিত্রতা নষ্ট করেছেন।”
এদিন আদালতে এসএসসি আদালতে জানায়, ৮,৩২৪ জন অযোগ্য শিক্ষককে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু বাকি প্রায় ১৯ হাজার চাকরি বৈধ। তবে কীভাবে এই যোগ্য-অযোগ্য বাছাই করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিচারপতিরা। ১৬ জুলাই এসএসসি আদালতের কাছে যোগ্য-অযোগ্য কীভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানাতে পারলে যোগ্য চাকরিপ্রাপকদের চাকরি বেঁচে যেতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। তাই যে রায় হয়েছে তাতে কিছুটা আশার আলো দেখতে পাচ্ছেন যোগ্য চাকরিপ্রার্থীরা।