সানি সরকার, শিলিগুড়ি: এখনও কান্নার রোল, হাহাকার বিধ্বস্ত এলাকায়। জলপাইগুড়ি ছাপিয়ে ক্ষতচিহ্ন স্পষ্ট আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারেও। এমন পরিস্থিতিতে ফের অশনি সংকেত। নতুন করে ধেয়ে আসছে উত্তরে ঝড় (Storm)। এমন পূর্বাভাস পেয়ে উত্তরবঙ্গের ছয় জেলার জন্য নতুন করে সতর্কতা (North Bengal Storm) জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর। জেলা প্রশাসনগুলির পাশাপাশি হাওয়া অফিসের তরফে পূর্বাভাস-রিপোর্ট (Bengal Weather) পাঠানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। প্রাথমিকভাবে মূলত ৬ এপ্রিলের জন্য সতর্কতা জারি করা হয়েছে। উত্তরবঙ্গের উপর নিম্নচাপ অক্ষরেখা সৃষ্টির পাশাপাশি বজ্রগর্ভ মেঘ সৃষ্টি এবং বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্পের যোগানের সম্ভাবনা দেখা দেওয়ায় ঝড়-বৃষ্টির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
আবহাওয়া দপ্তরের সিকিমের কেন্দ্রীয় অধিকর্তা গোপীনাথ রাহার বক্তব্য, ‘বর্তমান আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটতে চলেছে বৃহস্পতিবার থেকে। ওইদিন পাহাড়ের বৃষ্টির পাশাপাশি ঝোড়া হাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। শুক্র এবং শনিবার পাহাড়ের পাশাপাশি সমতলের আবহাওয়ার পরিবর্তন ঘটবে। বিক্ষিপ্তভাবে কয়েকটি এলাকায় ঝড়ের গতিবেগ অনেকটাই বৃদ্ধি পাবে।’ জেলা প্রশাসনের পাশাপাশি নির্বাচন কমিশনকে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে বলে তিনি জানান।
বৃদ্ধি পাচ্ছে তাপমাত্রা। আর তার জেরে যেমন বজ্রগর্ভ মেঘ সৃষ্টির পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে উত্তরবঙ্গে, তেমনই ঘাটতি পূরণে বঙ্গোপসাগর থেকে জলীয় বাষ্পের যোগান ঘটতে চলেছে। আর তাতেই অশনি সংকেত দেখছেন আবহবিদরা। ৩১ মার্চের মতো টর্নেডো পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে কিনা, তা এখনও স্পষ্ট নয়। ওইদিন বর্জগর্ভ মেঘ সৃষ্টি সহ কয়েকটি শর্তপূরণ হওয়ায় টর্নেডো আছড়ে পড়েছিল জলপাইগুড়ি শহরের পাশাপাশি ময়নাগুড়ির বড় একটি অংশে। দমকা হাওয়ায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় আলিপুরদুয়ার এবং কোচবিহারও। ফের বজ্রগর্ভ মেঘ সৃষ্টির সম্ভাবনায় আগাম সতর্কতা জারি করেছে আবহাওয়া দপ্তর। পূর্বাভাস অনুসারে, ৪ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দার্জিলিং, কালিম্পং, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়িতে বজ্রবিদ্যুৎ সহ বিক্ষিপ্তভাবে হালকা বৃষ্টি হতে পারে। শুক্রবার এই চারটি জেলার সঙ্গে কোচবিহার এবং উত্তর দিনাজপুর জেলার একটা অংশে ঝড়-বৃষ্টির পূর্বাভাস রয়েছে। কোথাও কোথাও ঘণ্টায় ৩০ থেকে ৪০ কিলোমিটার গতিবেগে ঝড় বইতে পারে। ঝড়ের এই গতির পরিবর্তন ঘটবে শনিবার। বৃষ্টির পাশাপাশি ওইদিন ঘণ্টায় ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিতে ঝড় হতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া দপ্তর। কোথাও কোথাও ঝড়ের গতিবেগ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন আবহবিদদের একাংশ। গোপীনাথ রাহার বক্তব্য, ‘সময় যত এগিয়ে আসবে, ততই ছবিটা পরিষ্কার হবে।’
এদিকে, রবিবারের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখা শুরু করেছে আবহাওয়া দপ্তর। ঘটনাস্থলে পৌঁছে আবহাওয়া দপ্তরের একটি দল কী ধরনের ক্ষতি হয়েছে, ক্ষতির পরিমাণ কেমন খতিয়ে দেখেন। দলটি বেশ কিছু নমুনা সংগ্রহ করার পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলেন। একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝলসে যাওয়া কিছু গাছের পাতা দলটি পেয়েছে। অর্থাৎ ওইদিন যে টর্নেডো আছড়ে পড়েছিল, তা নিয়ে কোনও সংশয় নেই। কেননা, একমাত্র টর্নেডোর ক্ষেত্রেই তাপমাত্রা বৃদ্ধির জেরে গাছের পাতা পুড়ে যায়।