রায়গঞ্জ: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাগিংয়ের রেশ কাটতে না কাটতেই উত্তর দিনাজপুর জেলার ডালখোলার জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ে র্যাগিংয়ের শিকার হল অষ্টম শ্রেণির এক পড়ুয়া। এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে জেলাজুড়ে। ইতিমধ্যে ওই পড়ুয়ার অভিভাবক বিদ্যালয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। জানা গিয়েছে, বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির তিন ছাত্র অষ্টম শ্রেণির ছাত্র রণজিত পালকে র্যাগিং করেছে। রণজিতের বাড়ি জেলারই ইটাহার থানার অন্তর্গত বোষ্টমতলায়।
গত রবিবার রণজিতের বাবা ঈশ্বরচন্দ্র পাল ছেলেকে নিয়ে বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাস শিবালিক হাউসে রেখে আসেন। অভিযোগ, ওই রাতেই রণজিতকে ডেকে পাঠায় ছাত্রাবাসের দশম শ্রেণির তিন ছাত্র মনদীপ বর, বিশাল সিং, সারিফুল রশিদ। তাদের এঁটো বাসন মাজা ঠিক হয়নি সহ নানান অজুহাতে রণজিতের উপরে চলে অকথ্য অত্যাচার। সঙ্গে চলে মারধর সহ অশালীনতা। রণজিৎ এই বিষয়ে হোস্টেল সুপারকে অভিযোগ জানালে তার উপর আবারও নেমে আসে অবর্ণনীয় অত্যাচার। বিষয়টি রণজিত বাড়িতে জানালে বাবা ঈশ্বরচন্দ্র পাল পরিবারের সদস্য ও গ্রামেরই দুই একজনকে সঙ্গে নিয়ে ছুটে যান বিদ্যালয়ে। ছেলের উপর শারীরিক ও মানসিক অবস্থা দেখে ঈশ্বরবাবু বিদ্যালয়ের হোস্টেল সুপার ও অধ্যক্ষকে লিখিত জানান। এরপর ছেলেকে নিয়ে ইটাহারের বাড়িতে চলে আসেন। বর্তমানে এখানেই তার চিকিৎসা চলছে।
রণজিতের এক আত্মীয় বলেন, ‘সেখানে গিয়ে দেখি রণজিতকে গালে, পেটে ও পিঠে মেরেছে। বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করার দাগ দেখেই আমরা বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অভিযোগ দায়ের করি। অভিযোগ পাওয়ার পর বিদ্যালয় কতৃপক্ষ ওই তিন ছাত্রকে সাসপেন্ড করে। কিন্তু ওই তিন পড়ুয়া রণজিতকে হুমকি দিতে থাকে। বাধ্য হয়ে ওকে নিয়ে চলে এসেছি। আমরা চাই ওদের কঠোর শাস্তি হোক।‘
রণজিত কথায়, ‘হোস্টেলের দাদারা আমার কাছে খাবার চায়। আমি খাবার নেই বলতেই আমাকে দিয়ে বাসন ধোয়ায়। তারপর নানা অজুহাতে আমাকে মারতে থাকে। আমি স্যারকে লিখিত জানাই। সেটা জানতে পেরেই আমাকে আবার বেদম মারধর করে তারা। আমি আর ওখানে যেতে চাই না। কারণ ওরা মেরে ফেলবে।‘ যদিও এই বিষয়ে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মুখ খুলতে চায়নি।