কলকাতা: প্রায় ১৪ ঘণ্টা তল্লাশির পর রাজ্যের মন্ত্রী সুজিত বসুর (Sujit Bose) বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেলেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (ইডি) (ED) আধিকারিকরা। বাজেয়াপ্ত করেছেন সুজিতের মোবাইল এবং বহু নথি। তল্লাশি শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যদি কাজের জন্য কেউ সুজিতকে এক টাকা দিয়ে থাকেন, আজই মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগপত্র দেব।’
শুক্রবার সকালে পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় (Municipality Recruitment Case) লেকটাউনে সুজিতের দু’টি বাড়ি এবং দপ্তরে হানা দেয় ইডি। তাঁরা বেরিয়ে গেলে সুজিত বসুকে ঘিরে ধরেন অনুগামীরা। দমকল মন্ত্রীর পাশে ছিলেন তাঁর ছেলে সমুদ্র বসুও। বাড়ি থেকে বেরিয়ে পাড়া দিয়ে হেঁটে লেকটাউনে বিবেকানন্দের মূর্তির দিকে এগিয়ে যান সুজিত। গতকাল বিবেকানন্দের জন্মদিবস উপলক্ষ্যে তিনি বিবেকানন্দের মূর্তিতে মালা দেন।
এরপরই সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে সুজিত জানান, তাঁর ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে, যা তাঁর পক্ষে অসুবিধাজনক। কারণ দমকলমন্ত্রী হিসাবে জরুরি পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত তিনি। পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, ইডি অফিসারদের তিনি এবং তাঁর পরিবারের সবাই সহযোগিতা করেছেন। সুজিতের কথায়, যদি কর্মক্ষেত্রে কেউ সুজিতকে এক টাকা দিয়ে থাকেন, মুখ্যমন্ত্রীকে পদত্যাগপত্র দেবেন তিনি। মন্ত্রী বলেন, ‘৪৫ বছর রাজনীতি করেছি। সিপিএম করতাম। এলাকায় একটা মাঠের ব্যাপার নিয়ে দল ছেড়েছিলাম। তারপর নির্দল প্রার্থী হিসাবে জিতেছি। দশ বার জিতেছি। সাত বারের কাউন্সিলার। তিন বার বিধানসভায় জিতেছি। এক বার লোকসভা ভোটেও লড়েছি।’ শুভেন্দুকে (Suvendu Adhikari) নিশানা করে সুজিত বসুর পালটা জবাব, ‘শীতের জামাকাপড় নেব কিন্তু জেল নয়, গঙ্গাসাগরে যাব। তার পর ফিরেও আসব।’ বিরোধী দলনেতাকে কটাক্ষ করে চ্যালেঞ্জের সুরে তিনি বলেন, ‘বিজেপি তাঁকে কোনও বড় পদ দেবে না।’ মন্ত্রীর কথায়, ‘শুভেন্দু যে বলছেন আমি এগরোল বেচতাম, উনি তো প্রধানমন্ত্রীকেই অসম্মান করছেন। নরেন্দ্র মোদিও তো চা বেচতেন।’
পুর নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় গতকাল আরও দুই জায়গায় তল্লাশি চালায় ইডি। তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় এবং উত্তর দমদম পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার সুবোধ চক্রবর্তীর বাড়িতে হানা দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তাপস বরাহনগরের তৃণমূল (Trinamool) বিধায়ক। তাঁর বৌবাজারের বাড়িতে হানা দেয় ইডি। প্রায় ১২ ঘণ্টা তল্লাশির পর সেখান থেকে বেরিয়ে যান ইডি আধিকারিকরা। সুবোধ উত্তর দমদম পুরসভার ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার। আগে উত্তর দমদম পুরসভার চেয়ারম্যানও ছিলেন।