নাগরাকাটা: ইস্তফা দিয়েছেন দেশের কুলীন চা শিল্প গোষ্ঠী হিসেবে পরিচিত গুডরিক গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর (এমডি) অতুল আস্থানা। বিষয়টিকে তাঁর একান্তই ব্যক্তিগত কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হলেও সংশ্লিষ্ট মহল জানাচ্ছে, গুডরিক ২০২৩ সালে আর্থিক ক্ষতির মুখোমুখি হয়। তৈরি চায়ের উপযুক্ত দাম না পাওয়া ও উৎপাদন ব্যয়ের লাগামছাড়া বৃদ্ধি এর পেছনে রয়েছে। গুডরিকের এমডির ইস্তফা যে এই শিল্প সংকটের মুখে দাঁড়িয়ে আছে তারই প্রতিফলন, এমনটাই মত উত্তরের চা বণিকসভাগুলির।
উত্তরবঙ্গে গুডরিক গ্রুপের মোট ১৭টি চা বাগান রয়েছে। সেগুলির মধ্যে পাহাড়ের বাগানগুলি হল ক্যাসেলটন, মার্গারেট হোপ, টার্বো, বাদামতাম ও বার্নেসবেগ। অন্যদিকে ডুয়ার্সে রয়েছে সংকোশ, কুমারগ্রাম, লক্ষ্মীপাড়া, গ্যান্দ্রাপাড়া, জিতি, হোপ, চিলৌনি, চালসা, আইভিল, লিসরিভার ও মীনগ্লাস। এককথায় চা শিল্পে উত্তরের মেরুদণ্ড হিসেবেই গুডরিক পরিচিত। এ বিষয়ে চা বণিকসভা ডিবিআইটিএ’র চেয়ারম্যান জীবন পান্ডে বলেন, ‘আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনা, দাম না পাওয়া এবং ক্রমহ্রাসমান উৎপাদনশীলতা চা শিল্পের জন্য এখন সবচেয়ে বড় দুশ্চিন্তার কারণ। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকারি প্যাকেজ জরুরি।’
টেরাই ইন্ডিয়ান প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (টিপা)-এর চেয়ারম্যান মহেন্দ্র বনসাল বলেন, ‘গুডরিকের এমডির ইস্তফা তাঁর ব্যক্তিগত বিষয়। তবে সংগঠিত ওই চা শিল্প গোষ্ঠীরই যেখানে বাগান চালাতে গিয়ে হিমসিম দশা, সেখানে অন্য বাগানগুলির পরিস্থিতি সহজেই অনুমেয়।’ ক্ষুদ্র চা চাষিদের সর্বভারতীয় সংগঠন সিস্টা-র সভাপতি বিজয়গোপাল চক্রবর্তীর কথায়, ‘অসম ও তামিলনাডু সরকার পরিস্থিতির মোকাবিলায় যেভাবে সেখানকার চা শিল্পের পাশে দাঁড়িয়েছে একইভাবে এ রাজ্যেও সরকারি হস্তক্ষেপ অত্যন্ত জরুরি।’
চা শ্রমিকদের যৌথ মঞ্চ জয়েন্ট ফোরামের অন্যতম আহ্বায়ক মণিকুমার দার্নাল বলেন, ‘কোনও সংশয় নেই গুডরিকের প্রতিটি বাগানের ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত বিজ্ঞানসম্মত। শীর্ষকর্তার পদত্যাগ তাঁদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে এই শিল্পের মন্দা আমাদের কাছেও মাথাব্যথার কারণ।’