বালুরঘাট: পরপর দু’বার সেরা হাসপাতালের খেতাব জয় করেছে বালুরঘাট জেলা হাসপাতাল। অথচ প্রতিদিন খবরের শিরোনামে উঠে আসছে তার দুর্দশার কথা। ডিজিটাল এক্সরে মেশিনের পর এবার খরচের খাতায় পিএসএ প্ল্যান্ট। অক্সিজেনের পিউরিটি না থাকায় মুখ থুবড়ে পড়েছে এই প্রকল্প। নির্দিষ্ট কোম্পানি ও উপরমহলে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি। আপাতত পুরোনো নিয়মেই সিলিন্ডারের মাধ্যমে অক্সিজেন সরবরাহ করা হচ্ছে এই হাসপাতালে।
প্রায় দু’বছর আগে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা হাসপাতালে রোগীদের মধ্যে অক্সিজেন সরবরাহের জন্য তৈরি করা হয়েছিল পিএসএ প্লান্ট। যেখানে অক্সিজেন তৈরি করা হতো। তার পরে সরাসরি তা চলে যেত সিসিইউ ইউনিটে। কিন্তু উদ্বোধনের পর থেকেই এটিকে আর কাজে লাগানো সম্ভব হয়নি। বিপদকালীন পরিস্থিতি মোকাবিলায় হাসপাতালের এক প্রান্তে বসানো হয়েছিল অক্সিজেন প্ল্যান্ট। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দপ্তরের উদ্যোগে মুখ্যমন্ত্রী এই প্ল্যান্টের উদ্বোধন করেছিলেন। কোভিড পরবর্তী সময়ে সিলিন্ডারের ঘাটতি মেটাতেই অক্সিজেন তৈরির জন্য এই প্ল্যান্ট নির্মিত হয়েছিল। কিন্তু এখন সেটি বিকল হয়ে পড়ে থাকায় পাশের একটি ঘরে বাইরে থেকে সিলিন্ডার নিয়ে এসে পাইপ লাইনের মাধ্যমে সিসিইউ ইউনিটে অক্সিজেন পাঠানো হচ্ছে। সেখানে কর্মীরা নিয়মিত কাজও করছেন। বর্তমানে তিনজন কর্মী দেখাশোনার দায়িত্বে রয়েছেন। অক্সিজেন সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখার দিকটিও তারা দেখেন। পিএসএ প্লান্টে কাজ করার সময় তারা অক্সিজেনের পিউরিটি ৯৫ শতাংশের উপরে না থাকার বিষয়টি লক্ষ্য করেছিলেন। যার ফলে কোনওদিনই সেই প্ল্যান্টে তৈরি হওয়া অক্সিজেন রোগীদের দেওয়া যায়নি। এই প্রকল্পটি ব্যর্থ হওয়ায় তারাও আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন। এখন বিশাল বড় জায়গাজুড়ে তৈরি পিএসএ প্ল্যান্টের গেটে সারাক্ষণই তালা ঝুলে থাকে।
অক্সিজেন প্ল্যান্টের কর্মী শম্ভু দেবনাথ বলেন, ‘প্রতিদিন দু’হাজার লিটার অক্সিজেন বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে রোগীদের দরকার পড়ে। কিন্তু ওই অক্সিজেন প্ল্যান্টে ৫০০ লিটারের বেশি হতো না। তবুও আমরা তা প্রতিদিনই চালু করতাম। কিন্তু কোনদিনই রোগীদের অক্সিজেন এখান থেকে দেওয়া হয়নি। এখন আগের নিয়মে সিলিন্ডারের মাধ্যমে পাইপ লাইনে অক্সিজেন যাচ্ছে।’
বালুরঘাট জেলা হাসপাতালে সুপার কৃষ্ণেন্দু বিকাশ বাগ বলেন, ‘শুরু থেকেই পিএসএ প্ল্যান্টে প্রায় ৮৫ এর মতো অক্সিজেন স্যাচুরেশন দিচ্ছিল। কিন্তু ৯৫ এর উপরে না হলে তার রোগীকে দেওয়া যায় না। এই নিয়ে টিটাগরের কোম্পানি ও স্বাস্থ্য দপ্তরকে বহুবার জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনও সদুত্তর পাইনি। সব প্রযুক্তি প্রস্তুত রয়েছে। কিন্তু যতদিন প্ল্যান্ট ঠিক না হচ্ছে, পুরোনো সিলিন্ডারের নিয়মেই অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে।’