উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: গার্ডেনরিচের ঘটনা (Garden Reach Incident) নিয়ে ফিরহাদ হাকিমকে (Firhad Hakim) তোপ দাগলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। পুরমন্ত্রী ফিরহাদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। শুভেন্দুর কথায়, গার্ডেনরিচ এলাকা কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমের ‘দুর্গ’। তিনিই পুর ও নগরোন্নয়নমন্ত্রী। তিনিই এলাকার বিধায়ক। তাই তাঁর নাকের ডগা দিয়ে পুরসভার অনুমোদন ছাড়া বেআইনি নির্মাণ হচ্ছে, আর সেই খবর ফিরহাদের কাছে নেই, তা মানতে নারাজ শুভেন্দু। সোমবার এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে গার্ডেনরিচের ঘটনা (Building Collapses) নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু। ফিরহাদের ভূমিকার পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলারের বিরুদ্ধেও একাধিক অভিযোগ তুলেছেন বিরোধী দলনেতা।
এদিন একটি পোস্টে শুভেন্দু লেখেন, ‘গার্ডেনরিচে পাঁচতলা বাড়ি তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়েছে। ধ্বংসস্তূপে আটকে থাকা বাসিন্দাদের উদ্ধার এবং আহতদের চিকিৎসার উপরেই অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। কিন্তু এই ঘটনা বেশ কিছু প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। প্রথমত, বাম সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে তৃণমূল সরকার আসার পর থেকে কলকাতা পুরসভা এলাকার মধ্যে পাঁচ হাজারের বেশি জলাজমি বেআইনিভাবে ভরাট করা হয়েছে। স্থানীয় কাউন্সিলার, পুলিশ এবং তৃণমূল নেতাদের মদতেই এই বেআইনি কাজগুলি হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যায়, কারণ কোনও ক্ষেত্রে প্রশাসনের তরফে বাধা আসেনি। বর্তমানে শুধু গার্ডেনরিচেই বেআইনি নির্মাণের সংখ্যা ৮০০-র বেশি। এলাকাটি ফিরহাদের ‘দুর্গ’। ওঁর এলাকায় ওঁর নাকের ডগা দিয়ে এই বেআইনি কাজ হচ্ছে আর উনি কিছু জানেন না, এটা কি বিশ্বাসযোগ্য?’ দোষী নিজেই রক্ষকের ছদ্মবেশে উদ্ধারকাজে শামিল হয়েছেন বলে কটাক্ষ করেছেন শুভেন্দু। এরপরই গার্ডেনরিচের ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার শামস ইকবালকে নিয়েও তোপ দাগেন বিরোধী দলনেতা। ভেঙে পড়া বহুতলের প্রোমোটারের পাশাপাশি এলাকার কাউন্সিলারকেও গ্রেপ্তার করা উচিত বলেও দাবি করেন তিনি।
যদিও সমস্ত অভিযোগের পালটা দিয়েছেন তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ তথা মুখপাত্র শান্তনু সেন। তাঁর কথায়, ‘মুখ্যমন্ত্রী নিজে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন এবং সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছেন। তাই এ বিষয়ে শুভেন্দুর মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই। শান্তনু আরও বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রীই জানিয়েছেন, বেআইনি কাজের সঙ্গে যারা যুক্ত, তাদের সকলকে শাস্তি দেওয়া হবে। দোষীদের কাউকে ছাড়া হবে না।’ তার আগে ফিরহাদও স্থানীয় কাউন্সিলারের পাশে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, ‘একজন কাউন্সিলারের পক্ষে বোঝা সম্ভব নয় কোনটা বৈধ নির্মাণ এবং কোনটা অবৈধ। এটা প্রশাসনের দায়িত্ব।’
গার্ডেনরিচের ঘটনায় মৃতদের পরিবার পিছু পাঁচ লক্ষ এবং আহদের এক লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে বলে সকালে জানিয়েছেন ফিরহাদ। এই ক্ষতিপূরণের অঙ্ক নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন শুভেন্দু। ক্ষতিপূরণ পর্যাপ্ত নয় বলে দাবি করেছেন তিনি। শুভেন্দুর কথায়, ‘মৃতদের পরিবারকে ৫০ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ১০ লক্ষ টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত ছিল।’