গঙ্গারামপুর: জমজমাট সম্প্রীতির মেলা। বখতিয়ার খিলজির মাজারে পুজো দিলেন হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন। প্রতিবছর বৈশাখ মাসের বৃহস্পতিবার বখতিয়ার খিলজি মাজারে হিন্দু ও মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষজন পুজো দেন। নিয়ম অনুযায়ী, এদিন থেকে পীরপাল গ্রামে বখতিয়ার খিলজির মাজারে শুরু হল পুজো ও মেলা। সকাল হতে হিন্দু ও মুসলিম ভক্তরা ফল, ফুল, বেলপাতা, দুধ, বাতাসা, খগরা, মুরকি, দিয়ে মাজারের পুজো দেন। মানত হিসেবে মাটির ঘোড়া দেওয়া হয়। এদিন বখতিয়ার খিলজির মাজার চত্বরে সত্যপীরের গানের আসর বসে।
কথিত আছে, ইখতিয়ার উদ্দিন মহম্মদ বিন বখতিয়ার খলজি ছিলেন কুতুব উদ্দিন আইবকের বিশ্বস্ত সেনাপতি। তুর্কী সেনাপতির সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কৃতিত্ব বাংলায় মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠাতা করা। ১২০৬ সালে ইখতিয়ার উদ্দিন মহম্মদ বিন বখতিয়ার খিলজি তিব্বত আক্রমণ করেন। কিন্তু শেষে পরাজয়ের সম্মুখীন হয়ে মাত্র ১০০ সৈন্য সামন্ত নিয়ে গঙ্গারামপুরের দেবীকোটে ফিরে আসেন। তিব্বত থেকে ফিরে বখতিয়ার খিলজি অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেসময় বখতিয়ার খিলজির সৈন্য আলি মর্দান দ্বারা নিহত হন। নিহতের পর তাকে তাঁর সেই আস্তানাতে সমাধিস্থ করা হয়। তখন থেকেই এলাকার বাসিন্দাদের কাছে বখতিয়ার খিলজি পীরসাহেব নামে পরিচিত হন।
পীর সাহেব মাটিতে শায়িত আছে বলে পীরপাল গ্রামের বয়স্ক মানুষজনরা আজও কাঠের চৌকিতে বা খাটে ঘুমান না। মাটিতেই ঘুমান। তবে বখতিয়ার খিলজি মাজারের চারদিকের প্রাচীর ধ্বংসাবশেষে পরিণত হওয়ায় এলাকার বাসিন্দারা সংস্কারের দাবি তুলেছেন।