বিপ্লব হালদার ও রূপক সরকার, গঙ্গারামপুর ও বালুরঘাট: দামি মোবাইল কিনে দিতে পারেননি বাবা-মা। তাই অভিমানে কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী (Suicide Case) হল নবম শ্রেণির পড়ুয়া। মৃতের নাম সূর্য সোরেন (১৫)। বাড়ি তপন (Tapan) থানার রামপুরে (Rampur)। এই ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
সূর্যের বাবা বিপ্লব সোরেন পেশায় কৃষক। তাঁর ছেলে সূর্য রামপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল। ছেলের আবদার মেটাতে চেষ্টায় কসুর করেননি বিপ্লব। স্মার্টফোন চাই, ছেলের এই দাবি মেনে বছরখানেক আগে নিজের সীমিত সামর্থ্যের মধ্যেই একটি স্মার্টফোন কিনেও দিয়েছিলেন। কিন্তু ছেলের তাতে মন ভরেনি। পরিবারের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, গত কয়েকদিন ধরে সূর্য ২২ হাজার টাকা দামের মোবাইল কেনার জেদ ধরেছিল। দামি মোবাইল ছাড়া ঠিকমতো নাকি গেম খেলা যাচ্ছে না!
নুন আনতে পান্তা ফুরোনো পরিবারের কাছে অত দামি মোবাইল কেনাটা সত্যিই বিলাসিতার। তবু ছেলের জেদের কাছে হার মানে পরিবার। ওই দামি মোবাইলও কিনে দিতে রাজিই হয়ে গিয়েছিলেন বিপ্লব। তবে সেজন্য তো টাকা জোগাড় করতে হবে। সেজন্য ছেলের কাছে কিছুটা সময় চেয়েছিলেন। কিন্তু তা মানতে চায়নি সূর্য। তা নিয়েই বকাবকি। আর তারপরেই এই ঘটনা।
সূর্যের দাদা অমিত হেমব্রম বলেন, ‘ভাই গেম খেলার জন্য দামি মোবাইল চেয়েছিল। আমাদের কাছে অত টাকা নেই। তবু ওর জেদের কাছে হার মানতে হয়। ওকে বলা হয়েছিল, কয়েকদিন পরে ওর পছন্দসই মোবাইল কিনে দেওয়া হবে। কিন্তু ভাই রাজি নয়। তাই অভিমানে কীটনাশক খেল।’
গত ৮ এপ্রিল কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার চেষ্টা করে সূর্য। তাকে গঙ্গারামপুর সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এতদিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে শনিবার রাতে মারা যায় সে। রবিবার গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বালুরঘাট সদর হাসপাতালে পাঠায়। গঙ্গারামপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, মোবাইল না পেয়ে এক নাবালক কীটনাশক খেয়ে আত্মঘাতী হয়েছে। ঘটনার তদন্ত চলছে।