বালুরঘাট: বালুরঘাট রেলস্টেশন থেকে মিলছে না তৎকাল টিকিট। দীর্ঘদিন ধরেই এমন অভিযোগ উঠছে। দূরদূরান্ত থেকে এসে ঘুরে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। তৎকাল টিকিটের ক্ষেত্রে দালাল চক্র কাজ করছে বলেই অভিযোগ। নির্দিষ্ট সময়ে আসলেও টিকিট না পাওয়ায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে বালুরঘাট তথা জেলাবাসীর মধ্যে। এমন অভিযোগ পেতেই এবার পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন উত্তর পূর্ব রেলের ম্যানেজার চেতন কুমার শ্রীবাস্তব।
রাজ্যের প্রত্যন্ত এলাকা বলেই পরিচিত দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা। এই জেলায় ২০০৪ সালে রেল আসে। প্রথমে একটা পরে ধীরে ধীরে আরও ট্রেন চালু হয়। যাত্রীদের সুবিধার জন্য বালুরঘাট স্টেশনের পাশাপাশি শহরের মধ্যে বালুরঘাট যুব কল্যাণ দপ্তরের পাশেই একটা টিকিট কাউন্টার রয়েছে। স্টেশন থেকে টিকিট কাটার পাশাপাশি যুব কল্যাণ দপ্তরের কাউন্টার থেকে টিকিট কাটে সাধারণ মানুষ। অভিযোগ, বালুরঘাট স্টেশনে টিকিট কাউন্টারের বেশিরভাগ সময়ই লিংক নেই, সার্ভার ডাউন বলে যাত্রীদের ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এমনকি নির্দিষ্ট সময়ের আগে গেলেও টিকিট মেলে না বলেই অভিযোগ।
এদিকে হিলি সীমান্ত দিয়ে অনেক বাংলাদেশীরা বালুরঘাটে আসেন। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তাঁরা চিকিৎসার জন্য আসেন। এমনকি টিকিট কাউন্টারে টিকিট না পেয়ে তাঁরা শহরের নানা অনলাইন টিকিট বুকিং কাউন্টার থেকে টিকিট কাটতে বাধ্যহন। হঠাৎ করে টিকিটের প্রয়োজন হওয়ায়, এক শ্রেণির দালালদের নজর এমন যাত্রীদের উপর থাকে। চাহিদা অনুযায়ী তৎকাল টিকিটের দাম চাওয়া হয়। টিকিটের মূল্য থেকে ৫০০, ১০০০ ও ১৫০০ হাজার টাকা বেশি নেওয়া হয়। সাধারণত তৎকাল টিকিট ট্রেন ছাড়ার ২৪ ঘণ্টা আগে কাটতে হয়। সকাল ১০টায় তৎকাল টিকিট বুকিং শুরু হয়। খুব অল্প সময়ের মধ্যে সেই টিকিট শেষ হয়ে যায়। সাধারণ মানুষ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও টিকিট পান না। এখানেই অভিযোগ উঠছে রেলকর্মীদের সঙ্গে দালালদের যোগসাজশ রয়েছে। যার জন্য এমনটা হয়। এছাড়া এমন অভিযোগ, রেলের জিএম ও ডিআরমের কাছেও গিয়েছে।
এবিষয়ে বালুরঘাটের বাসিন্দা উৎপল মণ্ডল বলেন, ‘মাঝেমধ্যে গ্রামের অনেকেই বাইরে কাজ করতে যায়। হঠাৎ যাওয়া ঠিক হয়। সেই কারণে আগে থেকে টিকিট কাটা যায় না। তৎকাল টিকিট কাটতে হয়। আর স্টেশনে গেলে পরে টিকিট পাওয়া যায় না। নির্দিষ্ট সময়ের আগে গেলেও টিকিট পাই না। দালাল চক্র যুক্ত রয়েছে। যার জন্য এমনটা হয়।‘
বালুরঘাট একলাখী রেল উন্নয়ন কমিটির সম্পাদক পীযূষ কান্তি দেব বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরেই তৎকাল টিকিট বালুরঘাট রেলস্টেশন থেকে পাওয়া যাচ্ছে না। এই অভিযোগ আমাদের কাছেও এসেছে। এনিয়ে রেল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। বেশি টাকা দিয়ে দালালদের কাছ থেকে টিকিট কাটতে হচ্ছে। এনিয়ে আবার সংস্থার তরফে থেকে অভিযোগ জানানো হবে।‘
অন্যদিকে এবিষয়ে উত্তর পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার চেতন কুমার শ্রীবাস্তব বলেন, ‘অভিযোগটি পেয়েছি। এমনটা যাতে না হয় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।‘