শুভজিৎ দত্ত, নাগরাকাটা : আন্তর্জাতিক চা দিবসে স্পেশাল প্লাকিং-এর কথা ঘোষণা করল টি বোর্ড। সর্বোচ্চ গুণমানের চা উত্পাদনের জন্য দুটি পাতা, একটি কুঁড়িকে বেছে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। গত তিন বছর ধরে ২১ মে দিনটিকে আন্তর্জাতিক চা দিবস হিসেবে উদযাপন করা হচ্ছে। ২০১৫ সালের অক্টোবরে ভারত সরকার রাষ্ট্রসংঘের ফুড অ্যান্ড অ্যাগ্রিকালচার অর্গানাইজেশনের (ফাও) ইন্টার কন্টিনেন্টাল গ্রুপের (আইসিজি) কাছে আন্তর্জাতিক চা দিবস হিসেবে ২১ মে-কে স্বীকৃতি দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল।
আগের দুবারের মতো দিনটিকে উদযাপনের জন্য টি বোর্ডের তরফে আরও কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে। তার মধ্যে স্পেশাল প্লাকিং অন্যতম। ২১ মে রবিবার হওয়ায় ১৯ মে বাগানগুলিকে স্পেশাল প্লাকিং-এর কথা বলেছে টি বোর্ড। বোর্ডের চেয়ারম্যান সৌরভ পাহাড়ি বলেন, চায়ের জন্য নির্দিষ্ট একটি দিনের মাধ্যমে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় পানীয়র প্রতি আকর্ষণ আরও বাড়াতে এমন উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
ইন্ডিয়ান টি প্ল্যান্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের ডুয়ার্স শাখার সম্পাদক রামঅবতার শর্মার বক্তব্য, স্পেশাল প্লাকিংয়ের অর্থ একেবারে ব্যাকরণ মেনে নিখুঁত মানের কাঁচা পাতা তোলা। এই উদ্যোগে ভালো মানের চা তৈরির সুস্থ প্রতিযোগিতা আরও বাড়বে বলেই বিশ্বাস করি। গুণগতমানই বাজার অর্থনীতির শেষকথা।
টি বোর্ড সূত্রে জানা গিয়েছে, স্পেশাল প্লাকিংয়ে যাতে সব বড় বাগান ও বটলিফ ফ্যাক্টরিগুলি অংশ নেয়, তার জন্য আর্জি জানানো হয়েছে। ১৯ মে যে কাঁচা পাতা তোলা হবে, তা দিয়ে পরের দিনের চা উত্পাদনের কথা জানানো হয়েছে। স্পেশাল প্লাকিংয়ে চা জুন মাসে দেশের বিভিন্ন নিলামকেন্দ্রের মাধ্যমে বিক্রি হবে। যে বাগানগুলি এতে অংশ নেবে, তারা যাতে ১৬ মের মধ্যে সংশ্লিষ্ট নিলামকেন্দ্রগুলিতে নির্দিষ্ট ফর্মে নাম জমা দেয় তা নিশ্চিত করার কথা বলা হয়েছে। স্পেশাল প্লাকিং-এর চা অবশ্য যত খুশি নিলামের জন্য পাঠানো যাবে না। এক্ষেত্রে সীমারেখা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। সিটিসি বা অর্থডক্স- দুধরনের চা উত্পাদন করা যেতে পারে। বাগানগুলি ওই দুই ক্যাটিগোরি পিছু সর্বোচ্চ ৫ লট করে চা নিলামের জন্য পাঠাতে পারে।
টি বোর্ডের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে উত্তরবঙ্গের চা শিল্প মহল। জলপাইগুড়ি জেলা ক্ষুদ্র চা চাষি সমিতির সম্পাদক বিজয়গোপাল চক্রবর্তী বলেন, বর্তমানে চা বাগানগুলি নানা সমস্যায় ধুঁকছে। ক্ষুদ্র চাষিদের অবস্থা আরও খারাপ। এমন আবহে স্পেশাল প্লাকিং-এর মাধ্যমে উচ্চমানের চা তৈরির উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। তাঁর সংযোজন, তবে চায়ে বাজার কীভাবে প্রশস্ত করা যায়, সেটা নিয়ে টি বোর্ডের পদক্ষেপ করা উচিত।