অর্ঘ্য বিশ্বাস, ময়নাগুড়ি: বন দপ্তরের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও এখনও ডুয়ার্সের বিভিন্ন চা বাগানে (Tea Garden) লাগানো রয়েছে রেজরওয়্যার ফেন্সিং বা ব্লেডতারের বেড়া। ফলে ধারালো এই ব্লেডতারের সংস্পর্শে এসে বন্যপ্রাণী আহত হওয়ার ঘটনা অব্যাহত রয়েছে জঙ্গলঘেরা ডুয়ার্সের বিভিন্ন এলাকায়। বন্যপ্রাণ রক্ষায় বন্যপ্রাণীদের করিডরে অবস্থিত চা বাগানগুলির ব্লেডতারের বেড়া খুলে ফেলার দাবিতে সরব হয়েছেন বিভিন্ন পরিবেশপ্রেমী সংগঠনের সদস্যরা। তবে ডুয়ার্স ব্রাঞ্চ ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান জীবন পান্ডে বলেন, ‘অধিকাংশ চা বাগানেই ব্লেডতারের বেড়াগুলি খুলে ফেলা হয়েছে। এখনও কোনও বাগানে এই তার থেকে থাকলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’
জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) জেলার গরুমারা, আপালচাঁদ সহ বিভিন্ন বনাঞ্চল সংলগ্ন চা বাগানগুলিতে এখনও এই ব্লেডতারের অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এর আগে ধারালো এই তারের সংস্পর্শে এসে হাতি, বাইসন, হরিণ সহ একাধিক বন্যপ্রাণী মারাত্মকভাবে জখম হওয়ার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছিল। সম্প্রতি ডুয়ার্সের একটি চা বাগানে এই ধারালো তারের বেড়া পারাপার করতে গিয়ে একদল বাঁদর ক্ষতবিক্ষত হয়ে যায়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে রাস্তার ধারেই এই বিপজ্জনক তারগুলি লাগানো থাকায় গবাদিপশু এমনকি মানুষের আহত হওয়ার ঘটনাও বিরল নয়। বেশ কয়েক বছর আগে তৎকালীন বনমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ও জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ডুয়ার্সে এসে চা বাগানগুলি থেকে এই ব্লেডতারের বেড়া খুলে ফেলার নির্দেশ দিয়েছিলেন। এরপর বেশ কয়েকটি চা বাগান কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে উদ্যোগ নিলেও প্রশাসনিক নির্দেশ উপেক্ষা করে এখনও একাধিক চা বাগানে এই ব্লেডতারের বেড়া চোখে পড়ছে। ফলে বন্যপ্রাণীদের জখম হওয়ার সম্ভাবনাও রয়ে গিয়েছে।
পরিবেশপ্রেমী অনির্বাণ মজুমদারের কথায়, ‘এই ব্লেডতারের বেড়াগুলি শুধু বন্যপ্রাণীদের জন্যই নয়, সকলের জন্যই বিপজ্জনক। চা বাগানগুলিতে লাগানো এই ব্লেডতারের সংস্পর্শে এসে কত যে হরিণ, চিতাবাঘ, বাইসন, হাতি, বাঁদর ও গবাদিপশু গুরুতর জখম হয়েছে বা প্রাণ হারিয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই। এখনও যে সমস্ত চা বাগানে ওই তার লাগানো রয়েছে, সে সমস্ত চা বাগান কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করার আর্জি জানাই।’ বন দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এর আগে বন দপ্তরের পক্ষ থেকে চা বাগানগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল ব্লেডতারগুলি খুলে ফেলার। বন দপ্তরের পক্ষ থেকেও একাধিক জায়গায় অভিযান চালিয়ে ওই তার খুলে ফেলা হয়। এরপরও যদি কোথাও ব্লেডতার থেকে যায়, তাহলে বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে।