নাগরাকাটাঃ শুক্রবারের তৃতীয় বোনাস বৈঠক ব্যর্থ হয়ে যাওয়ার পর গেট মিটিং শুরু হল ডুয়ার্সের বিভিন্ন চা বাগানে। শনিবার সকালে ডান-বাম বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনগুলি একত্রিত হয়ে গেট মিটিংয়ে শামিল হয়। তাদের দাবি ২০ শতাংশ হারেই বোনাস দিতে হবে। দাবি মোতাবেক বোনাস না মিললে রাস্তা অবরোধ থেকে শুরু করে ধর্মঘটের মতন কড়া হুঁশিয়ারি তারা দিয়ে রেখেছেন। দাবি আদায়ের লক্ষ্যে শনিবার সকাল থেকে তরাই ও ডুয়ার্সের বেশ কয়েকটি চাবাগানে গেট মিটিংয়ে শামিল হয় শ্রমিক সংগঠন গুলির একাংশ।
এদিন সকাল থেকেই লুকসান চা বাগানের গেট মিটিংয়ে অংশ নেয় বিজেপি প্রভাবিত ভারতীয় টিম ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন। উপদেষ্টা চুনিলাল মুন্ডা বলেন ২০ শতাংশ বোনাস শ্রমিকদের ন্যয্য অধিকার। তা থেকে মালিকপক্ষ বঞ্চিত করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। এটা মেনে নেওয়ার কোন প্রশ্নই নেই। দ্রুত দাবি না মানলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামা হবে।
২০ শতাংশ বোনাসের দাবিতে শনিবার থেকে চোপড়া সহ উত্তর দিনাজপুর জেলার তরাই ইন্ডিয়ান প্লান্টার্স অ্যাসোসিয়েশন(টিপা)র অধীনে থাকা সব বড় বাগানে এক ঘন্টা করে গেট মিটিং করে তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়ন। সংগঠনের জেলা কমিটির জয়েন্ট জেনারেল সেক্রেটারি কালু সিং জানান, মালিকপক্ষের বক্তব্য তারা ১৫ শতাংশ হারে বোনাস দেবে। কিন্তু সংগঠনের দাবি ২০ শতাংশ হারে বোনাসের। এদিন উত্তর দিনাজপুর জেলার ২৮ টি চা বাগানে গেট মিটিং হয়েছে।
২০ শতাংশ বোনাসের দাবীতে কাজ বন্ধ রেখে ধর্ণায় বসল বানারহাটের গ্যান্দ্রাপাড়া চা বাগানের সমস্ত শ্রমিক। শনিবার সকাল থেকেই বন্ধ থাকল চা বাগানের সমস্ত কাজকর্ম। গ্যান্দ্রাপাড়া চা বাগানের তৃণমূল, কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএম শ্রমিক সংগঠনের সমস্ত শ্রমিক ইউনিয়ন নেতৃত্ব এক ছাতার নিচে এসে গেট মিটিং করে। পরে তারা ফ্যাক্টরি গেটের সামনে ধর্ণায় বসে বিক্ষোভ দেখায়। ২০ শতাংশ বোনাস না দিলে জাতীয় সড়ক অবরোধের হুমকি দেয় শ্রমিক নেতৃত্ব।
উল্লেখ্য বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া এবারের তৃতীয় বোনাস বৈঠক শুক্র বারও চলে। কলকাতার বেঙ্গল চেম্বার অফ কমার্সে শ্রমিক- মালিক উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে দুদিনের বৈঠকটি হয়। কোন সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসেনি। মালিকরা সর্বশেষ ১৫ শতাংশ হারের বোনাস প্রস্তাব দেয়। জোটবদ্ধ শ্রমিকরা তা অস্বীকার করে। এমন পরিস্থিতিতে আগামী ১০ অক্টোবর চতুর্থ বোনাস বৈঠক ডাকা হয়েছে। এখন সেদিকেই চোখ উত্তরবঙ্গের দশ লক্ষ চা শ্রমিকের।