শিবশংকর সূত্রধর,কোচবিহার: ছাত্রকে মারধর করার অভিযোগে এক শিক্ষককে বহিষ্কার করল মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ। কোচবিহার-১ ব্লকের পানিশালা গ্রাম পঞ্চায়েতের ধাইয়েরহাট দারুলউলুম জান্নাতুল আরাবিয়া মাদ্রাসার এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। আহত ওই ছাত্র তিনদিন কোচবিহার (Cooch Behar) এমজেএন মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পর বুধবার বাড়ি ফিরেছে। ছাত্রের পরিবারের তরফে কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
মাদ্রাসায় ‘হাফিজ’ বিভাগে পড়াশোনা করে ১৩ বছরের নিগৃহীত ওই ছাত্র। বাড়ি ঘুঘুমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের ধলুয়াবাড়িতে। সে ওই মাদ্রাসার আবাসনে থেকেই পড়াশোনা করত। গত রবিবার রাতে সে কয়েকজন সহপাঠীর সঙ্গে বলরামপুরে একটি ধর্মীয় স্থানে যায়। সেখান থেকে ফেরার পর তার বিরুদ্ধে টাকা চুরির অভিযোগ ওঠে। সহপাঠীদের মধ্যে দুজন জানায়, সেই টাকা নাকি ওই ছাত্রই নিয়েছে। এরপর মাদ্রাসার শিক্ষক ইমান আলি ছাত্রটিকে কঞ্চি দিয়ে ব্যাপক মারধর করেন বলে অভিযোগ। ছাত্রের মা বলছেন, ‘ওই শিক্ষক রাতে মারধর করার পর সকালেও কঞ্চি দিয়ে মেরেছে। এমনকি ছেলেকে খেতে দেওয়া হয়নি। পরে জানতে পেরে আহত অবস্থায় ওকে মাদ্রাসা থেকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করাই। আমরা অভিযুক্ত শিক্ষকের শাস্তি চাই।’ তাঁর যুক্তি, ‘ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে সেটা আমাদের জানাতে পারত। তা না করে এভাবে মারধর করা উচিত হয়নি।’ নিগৃহীত পড়ুয়ার কথায়, ‘আমি চুরি করিনি। কিন্তু কয়েকজন বলেছিল আমি নাকি টাকা নিয়েছি। তারপরই স্যার আমাকে প্রচণ্ড মারে।’
ঘটনার পর গত সোমবার মাদ্রাসায় যায় নিগৃহীত ছাত্রের পরিবার। সেখানে কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরিবারের তীব্র বাদানুবাদ হয়। সেদিনই কোতোয়ালি থানায় অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়। মাদ্রাসার প্রধান শিক্ষক ফজলে রহমানের বক্তব্য, ‘আমরা পরদিন বিষয়টি জানতে পারি। সঙ্গে সঙ্গে ছাত্রের পরিবারকে বিষয়টি জানানো হয়। ঘটনার পরেই ওই শিক্ষককে বহিষ্কার করা হয়েছে।’ অভিযুক্ত শিক্ষকের সঙ্গে বারবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি। তবে, মারধরের পর বহিষ্কারের ঘটনায় স্বাভাবিকভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে মাদ্রাসাটিতে।