সানি সরকার, শিলিগুড়ি: দীর্ঘ টানাপোড়েন শেষে তিস্তায় (Teesta River) চালু হল র্যাফটিং (Teesta River Rafting)। টিকিট কাউন্টার নিয়ে মল্লি ও তিস্তা এলাকার মধ্যে যে বিরোধ তৈরি হয়েছিল, তা মিটিয়েই শুক্রবার র্যাফটিং চালু করে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (GTA) পর্যটন বিভাগ। প্রথমদিনই র্যাফটিংয়ের আনন্দ নিতে তিস্তাপাড়ে ভিড় জমান বেশ কিছু পর্যটক। তবে র্যাফটিং চালু করলেও বিপর্যয় এড়াতে নতুন করে কিছু বিধিনিষেধ জারি করেছে জিটিএ। জিটিএ’র অ্যাডভেঞ্চার ট্যুরিজমের চিফ কোঅর্ডিনেটর দাওয়া শেরপার বক্তব্য, ‘পর্যটকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতেই কিছু নিয়মাবলি মেনে চলার কথা বলা হয়েছে। আমাদের তরফেও নজরদারি রাখা হবে।’ ৪ অক্টোবর সাউথ লোনাক লেক বিপর্যয়ের জেরে ত্রাস হয়ে উঠেছিল তিস্তা। প্রাকৃতিক প্রলয়ে অনেকের যেমন মৃত্যু হয়েছে, তেমনই ক্ষয়ক্ষতি হয় প্রচুর। ওই ঘটনার পরই বন্ধ হয়ে যায় তিস্তায় র্যাফটিং।
প্রায় সাড়ে পাঁচ মাস পর তিস্তায় চালু হল র্যাফটিং। এদিন জিটিএ’র পর্যটন বিভাগের আধিকারিকদের উপস্থিতিতে র্যাফটিং চালু হয়। গত ১৩ মার্চ র্যাফটিং চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল জিটিএ। কিন্তু মল্লির বাসিন্দাদের আপত্তিতে তা আটকে যায়। র্যাফটিং এলাকার অধিকাংশ যখন মল্লির মধ্যে পড়ে, তখন কেন মেইন কাউন্টারের জায়গায় মল্লির জন্য পৃথক কাউন্টার থাকবে না, সেই প্রশ্ন তোলা হয়। মল্লির জন্য নতুন করে কাউন্টার খোলা না হলে র্যাফটিং চালু করতে দেওয়া হবে না বলেও হুমকি দেওয়া হয়। যার বিরোধিতা করেছিল তিস্তা-রঙ্গিত র্যাফটিং অ্যাসোসিয়েশন। যার জেরে র্যাফটিং চালুর সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরেও পিছিয়ে আসতে হয় জিটিএ-কে। যদিও ওইদিন র্যাফটিং চালু করতে না পারার জন্য টেকনিকাল প্রবলেমের কথা বলেছিলেন দাওয়া। জানা গিয়েছে, ওই ঘটনার পর দুই পক্ষকে নিয়ে বৈঠকে বসেন জিটিএ’র আধিকারিকরা। মল্লির কাউন্টারের যুক্তি মেনে নেন তিস্তার লোকজন। তারপরেই নতুন করে র্যাফটিং চালুর সিদ্ধান্তে সিলমোহর পড়ে।
মল্লির তরফে গোবিন্দ রাই বলেন, ‘আমাদের দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। কাউন্টার দেওয়া হয়েছে। আশা করছি আর কোনও সমস্যা হবে না।’ তিস্তা-রঙ্গিত র্যাফটিং অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি প্রমোদ ছেত্রীর বক্তব্য, ‘র্যাফটিং চালু হওয়ায় আমরা কাজ ফিরে পেলাম। বেশ ভালো লাগছে। আশা করছি আগের মতো ফের পর্যটকরা অ্যাডভেঞ্চারের টানে এখানে আসবেন। এদিকে, র্যাফটিং চালুর সঙ্গে র্যাফটিংয়ের সময় সাঁতার কাটা যাবে না, লাইফ জ্যাকেট-হেলমেট ব্যবহার বাধ্যতামূলক, গতি নিয়ন্ত্রণের মতো বেশ কিছু বিষয়ে বিধিনিষেধ কার্যকর করেছে জিটিএ। ১৫ জুনের পর বা ভারী বর্ষণ শুরু হলে যে র্যাফটিং বন্ধ থাকবে, তাও স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে জিটিএ’র তরফে।