সায়নদীপ ভট্টাচার্য, বক্সিরহাট: একশো দিনের বকেয়া মজুরি রাজ্যের তরফে মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সুবাদে প্রশাসনের তরফ থেকে প্রকাশ করা হচ্ছে প্রাপকদের নামের তালিকা। সেই তালিকা নিয়ে উঠছে দুর্নীতির (Corruption) অভিযোগ। তুফানগঞ্জ-২ ব্লকে বকেয়া প্রাপকের তালিকায় রয়েছে রয়েছে মৃত ব্যক্তির নামও। সেই সঙ্গে তৃণমূলের ছোট-বড় নেতাদের স্ত্রী , কারও বাবা- মা আবার কারও সন্তানদের নাম তো রয়েছেই।
আদৌ কি তাঁরা একশো দিনের কাজ (100 Days Work) করেছিলেন? প্রশ্ন তুলে সরব হয়েছেন খোদ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান। একশো দিনের কাজে দুর্নীতির অভিযোগ তুলে ৭৭টি জব কার্ডের মজুরি বন্ধের দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার তুফানগঞ্জ-২ বিডিও দপ্তরে লিখিত আবেদন জানালেন শালবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান মনোরঞ্জন বাড়িয়া। তদন্তের আশ্বাস দিয়েছেন বিডিও (BDO) ডালকি লামা।
গত পঞ্চায়েত নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে শালবাড়ি -২ গ্রাম পঞ্চায়েতের বোর্ড দখল করেছে বিজেপি। এখন ওই একশো দিনের কাজ নিয়ে শুরু হয়েছে তৃণমূল-বিজেপি তর্জা।
একশো দিনের কাজের বকেয়া মজুরি নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য নেতাদের মধ্যে প্রায় প্রতিদিনই বাগযুদ্ধ চলছে। এরই মাঝে জব কার্ডধারীদের বকেয়া মেটাতে শিবির খুলে তথ্য সংগ্রহ করছে তৃণমূল। সম্প্রতি শালবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের মাস্টার রোল প্রকাশিত হয়। প্রাপকের তালিকা পরীক্ষা করতে গিয়ে চোখ ছানাবড়া হওয়ার জোগাড়, দাবি গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের। ২০১৯ সালে মারা গিয়েছেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েতের বজরাপুর এলাকার বাসিন্দা জোৎস্না বর্মন। তবে ২০২১-‘২২ অর্থবর্ষে একশো দিনের মজুরি প্রাপকের তালিকায় নাম রয়েছে তাঁর। মৃতের শাশুড়ি সুখময়ী বর্মন বলেন, ‘তৃণমূলের পঞ্চায়েতের কাছে আবেদন জানানোর পর মিলতে একশো দিনের কাজ। তবে ২০১৯ সালে মারা গিয়েছেন বৌমা। মরে গিয়েও ২০২২ সালের ২ ফেব্রুয়ারি সে কীভাবে মাটি কাটল, জানি না।’
সেই তালিকায় নাম রয়েছে তুফানগঞ্জ-২ তৃণমূলের প্রাক্তন ব্লক সভাপতি রথীন মণ্ডলের স্ত্রী মালতীর। নাম আছে তৃণমূলের শালবাড়ি-২ অঞ্চল সভাপতি মিলন বর্মনের বাবা প্রাক্তন পঞ্চায়েত কমলাকান্ত বর্মনেরও। নাম রয়েছে তৃণমূলের প্রাক্তন গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান জ্যোতিষ বর্মার ছেলে জয়দীপের, তৃণমূলের অঞ্চল কমিটির চেয়ারম্যান পরিমল কার্জির স্ত্রী মৌসুমি কার্জির মতো অনেকের।
এদিকে, বিজেপির তোলা অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি তৃণমূলের। দলের শালবাড়ি -২ তৃণমূলের অঞ্চল কমিটির সভাপতি মিলন বর্মন জানান, ‘এটা কেন্দ্রীয় সরকারের কাজ। তাই কে কাজ করল, কার অ্যাকাউন্টে (Account) টাকা ঢুকবে গোটাটাই ওদের ব্যাপার। তাতে তৃণমূলের কোনও হাতে নেই।’