মণীন্দ্রনারায়ণ সিংহ,আলিপুরদুয়ার: আলিপুরদুয়ারের বক্সার বাঘবনে একাধিক বাঘের হদিস মিলেছে, এমনই ইঙ্গিত বন দপ্তরের কর্তাদের। প্রায় চার বছর বয়সি একটি বাঘের ছবি ইতিমধ্যে ট্র্যাপ ক্যামেরায় পরপর দু’বার ধরা পড়লেও পূর্ণবয়স্ক আরেকটি বাঘের পায়ের ছাপ সম্প্রতি বন দপ্তরের আধিকারিকদের নজরে এসেছে। বক্সার জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় অপেক্ষাকৃত বড় আকারের সেই বাঘটি রয়েছে। দ্বিতীয় বাঘটি জঙ্গলেই ঘোরাফেরা করছে বলে বিশেষজ্ঞরা নিশ্চিত।
দ্বিতীয় বাঘটিকে ক্যামেরাবন্দি করতে জঙ্গলে নতুন করে ট্র্যাপ ক্যামেরা পাতা হচ্ছে। নতুন করে পাওয়া পায়ের ছাপ দেখে তা পরীক্ষার পর আলাদা বাঘ বলে বিশেষজ্ঞ সূত্রে জানা গিয়েছে। বন দপ্তরের কর্তাদের আশা, শীঘ্রই দ্বিতীয় বাঘের ছবিও ক্যামেরায় ধরা পড়বে। রাজ্য বন দপ্তরের পিসিসিএফ (বন্যপ্রাণ) দেবল রায় বলেন, ‘প্রতিদিনই বাঘের পায়ের ছাপ বক্সার জঙ্গলে পাওয়া যাচ্ছে।’
বক্সার জঙ্গল বাঘেদের বসবাসের আদর্শ স্থান হয়ে উঠেছে সে ব্যাপারে নিশ্চিত বিশেষজ্ঞরা। জানা গিয়েছে, পাখি উৎসবে যোগ দিতে এসে এক পাখিপ্রেমীর ক্যামেরায় বাঘের পায়ের ছাপ ধরা পড়েছিল। বন দপ্তর সে নিয়ে প্রকাশ্যে কিছু না বললেও ওই পাখিপ্রেমী জানান, পায়ের ছাপ বাঘের বলেই তাঁকে জানানো হয়েছিল। ২৮ ডিসেম্বর বক্সায় একটি বাঘের অর্ধেক ছবি রাতে ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়েছিল। এর ক’দিন পরেই ৩১ ডিসেম্বর ফের একটি বাঘের পূর্ণ ছবি ধরা পড়ে ট্র্যাপ ক্যামেরায়। বনকর্তারা সবকিছু খতিয়ে দেখে বুঝতে পারেন, ওই দুটি ছবি একই বাঘের। যার বয়স প্রায় চার বছর হতে পারে। ২০২১ সালের ১২ ডিসেম্বর বক্সায় একটি পূর্ণবয়স্ক বাঘের ছবি ধরা পড়েছিল। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের শেষদিকে বক্সায় একাধিকবার বাঘের ছবি ট্র্যাপ ক্যামেরায় ধরা পড়তেই বন দপ্তরের কর্মী-আধিকারিকদের মধ্যে বাড়তি উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। পাহাড় থেকে বাঘ বক্সায় নেমে আসা শুধু নয়, তারা বক্সার গভীর জঙ্গলে দীর্ঘদিন থাকছে-সেরকমই বেশ কিছু চিহ্ন পেয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। বক্সার কোর এলাকার জঙ্গলে থাকা বনবস্তিগুলি উঠে গেলে সেখানে বাঘেরা পাকাপাকিভাবে থাকতে পারে এমন সম্ভাবনাও তাঁরা উড়িয়ে দিচ্ছেন না।
বনকর্তাদের আশা, গত কয়েক বছরে বক্সায় হাজারের বেশি হরিণ ছাড়ায় তারা অবাধেই সর্বত্র ঘুরে বেড়াচ্ছে। এখানে বাঘমামা একবার এলে হাতের নাগালে পাওয়া এত খাবার ফেলে অন্যত্র যাবে না।