উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ শ্মশানের বটগাছে সারাবছর বেঁধে রাখা হয় ভূতেদের। ভূতচতুর্দশীর রাতে একদিনের জন্য ভূতেদের নাকি মুক্তি দেওয়া হয় এখানে। মন্ত্রবলে ফের সেই অশরীরী আত্মাদের ধরে এনে বটগাছে বেঁধে ফেলা হয় কালীপুজোর রাতে। এই রাতেই ভূতেদের জন্য ভোগ রান্না হয়। যুগযুগ ধরে এমনই বিশ্বাসকে আঁকড়ে ধরে আছেন ভূতেদের ভোগ খাইয়ে আসছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
এমনই বিশ্বাস যুগযুগ ধরে বহন করে আসছেন আসানসোলে মহিশীলা কলোনীর বাসিন্দারা। কথিত আছে, আজ থেকে ৭০ বছর আগে আসানসোলের মহিশীলা ১ নম্বর কলোনিতে পিয়ালবেড়া শ্মশানের একটি বটগাছে ভূতদের মন্ত্রবলে বেঁধে দিয়ে গিয়েছিলেন বামাক্ষ্যাপার অন্যতম প্রধান শিষ্য বনমালী ভট্টাচার্য। আজ বনমালীবাবু জীবিত না থাকলেও সেই বিশ্বাস আজও বহন করে চলেছেন স্থানীয়রা। তাঁদের বিশ্বাস এখনও সেই গাছে নাকি বাঁধা আছে ভূতেদের দল।
স্থানীয়রা জানান, মাত্র ৭ বছর বয়সে বামাক্ষ্যাপার শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিলেন নদিয়ার বনমালী ভট্টাচার্য। তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহন করার পরই তন্ত্রসাধনা শুরু করেন তিনি। পরবর্তীতে তান্ত্রিক বনমালী ভট্টাচার্যকে আশ্রম গড়ে তোলার জন্য মহিশীলার পিয়ালবেড়া শ্মশানে জমি দান করেন আসানসোল গ্রামের রায় পরিবার। তখন পিয়ালবেড়া শ্মশান ছিল জঙ্গলে ভরা নির্জন এক স্থান। সেখানে নাকি তখন ভূতদের খুব উপদ্রব ছিল। রাতে কারও মৃত্যু ভূতের ভয়ে শ্মশানে যেতেন না স্থানীয়রা। সকাল হলে দেহ সৎকারে যেতেন তাঁরা। সেই নির্জন স্থানে তন্ত্রসাধনা শুরু করেন বনমালীবাবু। শুধু তাই নয়, এলাকায় ভূতের উপদ্রব বন্ধ করতে শ্মশানের সমস্ত ভূতেদের একটি বটগাছে মন্ত্রবলে বেঁধে দেন তিনি।
তবে বটগাছে বাঁধা ভূতেদের মাত্র একদিনের জন্য মুক্তি দেওয়া হয় ভূতচতুর্দশীর রাতে। তারামা-র নাম উচ্চারণ করে খোলা হয় ভূতেদের বাঁধন। দীর্ঘ ৭০ বছর ধরে চলে আসা এই রীতি মেনে শনিবার ভূতচতুর্দশীর রাতে ভূতেদের মুক্তি দেওয়া হয়েছে। আবার আজই কালীপুজোর রাতে প্রেতাত্মাদের মন্ত্রবলে বেঁধে দেওয়া হবে শ্মশানের বটগাছে। সেই বিশ্বাসে রবিবার ফের তারামায়ের মন্ত্র পড়ে ভূতেদের বেঁধে ফেলা হবে। বাধার আগে ভূতেদের জন্য ভোগ রান্না করে খাওয়ানো হবে।