বক্সিরহাট: বৌভাতের পরের দিনই বিবাহবিচ্ছেদের (Divorce) আবেদন করতে নববধূকে নিয়ে আদালতে হাজির হলেন বর। জানা গিয়েছে, বুধবারই ধুমধাম করে সামাজিক মতে বিয়ে হয় তাঁদের। হঠাৎই বৌভাতের রাতে সংসার করবেন না বলে বেঁকে বসেন নববধূ। ঘটনাটি ঘটেছে তুফানগঞ্জ-২ ব্লকের মহিষকুচি-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের পলিকা গ্রামে। এমনই কাণ্ডে শোরগোল পড়েছে এলাকাজুড়ে।
বুধবার আলিপুর জেলার সূর্যনগর এলাকার বাসিন্দা বাবলি দেবনাথের সঙ্গে পলিকা গ্রামের অমিত দেবনাথের বিয়ে হয়। দুই পরিবারের সম্মতিতে তিন মাস আগেই ঠিক হয় তাঁদের বিয়ের দিনক্ষণ। শুক্রবার ছিল তাঁদের বৌভাতের অনুষ্ঠান। বৌভাত উপলক্ষ্যে ছেলের বাড়িতে করা হয় বিরাট আয়োজন। সেই সময় বিয়ের ছবি তোলার জন্য নববধূ ও বরকে একসঙ্গে গলায় হাত দিয়ে দাঁড়াতে বলেন ফোটোগ্রাফার (Photographer)। ঠিক তখনই ঘটে বিপত্তি। বরের সঙ্গে ছবি তুলবেন না বলে বেঁকে বসেন নববধূ। তাঁর এমন আচরণে কার্যত হতবাক হয়ে যান বিয়েবাড়িতে উপস্থিত সকলে। এরকম অদ্ভুত আচরণের কারণ জানতে চাইলে নববধূর সোজা জবাব, তাঁর শ্বশুরবাড়ির গ্রাম মোটেই পছন্দ নয়। তাই সে সংসার করতে নারাজ। নববধূর (Bride) এমন আচরণে নিস্তব্ধতায় পরিণত হয় বৌভাতের অনুষ্ঠান। মেয়ের মা না আসা পর্যন্ত আটকে রাখা হয় কন্যাযাত্রীদের গাড়ি। পরে বাবলিকে বোঝানোর চেষ্টা করেন তাঁর মা। তবে তাতেও কোনও লাভ হয়নি।
শনিবার সকালে দুই পক্ষকে নিয়ে গ্রামে বসে সালিশি সভা। খবর দেওয়া হয় বক্সিরহাট থানায়। পুলিশকে (Police) ওই বধূ জানিয়েছেন, “এই গ্রাম তাঁর পছন্দ নয়। তাই সংসার করবে না সে। যদি ১-২ বছর পর মন চায় তখন সংসার করবে। তার আগে তাঁকে দিয়ে জোরপূর্বক সংসার করানোর চেষ্টা করলে আত্মঘাতী হবেন হুমকিও দেন তিনি । এরপরই বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করতে নববধূকে নিয়ে তুফানগঞ্জ মহকুমা দায়রা আদালতে হাজির হন তাঁর স্বামী। যদিও শেষ পর্যন্ত মেয়ের পরিবার কিছুটা সময় চাওয়ায় গ্রাহ্য হয়নি সেই মামলা।
এবিষয়ে নববধূর স্বামী অমিত দেবনাথ জানান, বিয়ের পাঁচদিন আগে আচমকাই তাঁর নম্বর ব্লক (Block) করে দেয় বাবলি। যদিও পরে জানায় যে হাত লেগে নম্বর ব্লক হয়ে গিয়েছে। বিয়ের পর থেকেই তিনি অস্বাভাবিক আচরণ লক্ষ্য করেন বধূর। তবে বৌভাতে সেই মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। তাই বাধ্য হয়েই বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা করতে আদালতে এসেছেন তিনি।