কিশনগঞ্জঃ বাপের বাড়ি যাওয়ার অপরাধে স্ত্রীকে তালাক দিল স্বামী। এমনই ঘটনা ঘটেছে বিহারের কিশনগঞ্জের কোচাধামন এলাকার ভবানীগঞ্জ গ্রামে। অভিযুক্ত স্বামী মহম্মদ আলম পরিযায়ী শ্রমিক। এই ঘটনায় অভিযুক্তের স্ত্রী আফসানা খাতুন কোচাধামন থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও তেমন সুরাহা মেলেনি বলে অভিযোগ। পরে ঘটনাটি কানে আসতেই জনতা দল ইউনাইটেডের মহাসচীব চাপ সৃষ্টি করতেই তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
ঘটনাটি চার মাস আগের। জানা গিয়েছে, ২০২০ সালের ১১ ডিসেম্বর কোচাধামন এলাকার ভবানীগঞ্জ গ্রামেই ইসলামিক মতে বিয়ে হয় মহম্মদ আলমের সঙ্গে আফসানার। মহম্মদ আলম বেঙ্গালুরুতে পরিযায়ী শ্রমিকের কাজ করেন। আফসানার বাবাও ভিন রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিক। মেয়ের বিয়েতে সাধ্যমতো পণ দেন। অভিযোগ বিয়ের পর আরও পণের দাবিতে স্ত্রীর উপর স্বামী মহম্মদ আলম শারীরিক মানসিক অত্যাচার শুরু করে। আবার বিয়ের মাসখানেক পরে আলম পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে ভিন রাজ্যে চলে যায়। কিন্তু একই গ্রামে বাপের বাড়ি হলেও আলমের মা বাবা আফসানার বাপের বাড়িতে যেতে দিত না বলে অভিযোগ। সম্প্রতি আফসানা শাশুড়ি রহিমা বেগমকে বলে একপ্রকার জোর করেই বাপের বাড়ী চলে যান। আর এই খবর পাওয়া মাত্র স্বামী আলম বেঙ্গালুরু থেকে স্ত্রী আফসানাকে মোবাইলে ফোন করে তিন তালাক বলে তালাক দেন। যদিও মুসলিম শরিয়ত মতে এই ঘটনা একেবারেই অবৈধ ও বেআইনী। এরপরই মাস চারেক আগে আফসানা কোচাধামন থানায় অভিযোগ করেন। কিন্তু পুলিশ কোন ধরনের পদক্ষেপ নেয়নি বলে অভিযোগ।
এদিকে শ্বশুর বাড়ীর লোকজন মামলা তুলে নেওয়ার জন্য নানাভাবে আফসানার উপর চাপ সৃষ্টি ও হমকি দিতে থাকে বলে অভিযোগ। অভিযোগ দায়ের হওয়া সত্ত্বেও পুলিশ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেওয়ায় শুক্রবার সন্ধ্যায় মহিলার পরিজনরা কোচাধামনের জনতা দল ইউনাইটেডের প্রাক্তন বিধায়ক ও দলের রাজ্য কমিটির মহাসচিব মুজাহিদ আলমকে বিস্তারিত জানান। মুজাহিদ তালাক প্রাপ্ত মহিলাকে ন্যায় বিচারের আশ্বাস দেন। আর পুলিশকেও বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখার জন্য তিনি আবেদন জানান। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসায় জেলার পুলিশ মহল ও সংখ্যালঘু সমাজে ব্যাপকভাবে চাঞ্চলের সৃষ্টি হয়েছে। কিশনগঞ্জ মহকুমা পুলিশ আধিকারিক গৌতম কুমার জানান পুলিশ এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।