রায়গঞ্জঃ মাছ ধরতে গিয়ে মৎস্যজীবীদের জালে উঠে এল পঞ্চায়েত ভোটের ব্যালট বাক্স। শুক্রবার বিকেলে ঘটনাটি ঘটে উত্তর দিনাজপুর জেলার ডালখোলা থানার আন্ধারিয়া গ্রামে। উদ্ধার হওয়া ব্যালট বাক্সে রয়েছে ভোট দেওয়া ব্যালট। এই ঘটনা জানাজানি হতেই ব্যপক শোরগোল পড়ে যায় এলাকায়। ব্যালট বাক্সটি করনদীঘি বিধানসভার ডালখোলা থানার ২৫ নং বুথের বলে সূত্রের খবর। পুলিশ ব্যালট বাক্সটি উদ্ধার করলেও মুখে কুলুপ এঁটেছেন জেলাপ্রশাসনের কর্তারা।
জানা গিয়েছে, এদিন বিকেলে ডালখোলা থানার আন্ধারিয়া গ্রামের বেলুয়ার অদুরে খুদি পুকুরে মাছ ধরার জন্য জাল ফেলেন স্থানীয় এক মৎস্যজীবী। জাল টান দিতেই অনুভব করেন হয়তো বড় মাপের মাছ ধরা পড়েছে জালে। আনন্দে জল থেকে জাল তুলতেই দেখতে পান, মাছের বদলে রয়েছে একটি সিল করা বাক্স। বাক্স দেখেই জেলের বুঝতে অসুবিধে হয়নি বাক্সটি ভোটের ব্যালট বাক্স। বাক্সের গায়ে লেখা আছে KDI 25 no Booth। এরপরই বিষয়টি জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ডালখোলা থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী। পুলিশ ব্যালট বাক্সটি উদ্ধার করে নিজেদের হেপাজতে নেয়। খবর দেওয়া হয় করনদিঘি ব্লকের বিডিও নিতিশ তামাং কে।
১২ নম্বর জেলা পরিষদের কংগ্রেস প্রার্থী ভবেন ঘোষ বলেন, ‘ভোটের নামে প্রহশন হয়েছে। তার কারণেই পুকুর থেকে মাছের সঙ্গে জেলেদের জালে উঠে আসছে ব্যালট বাক্স। স্বৈরাচারী ফ্যাসিস্ট সরকারের অপদার্থ পুলিশের নির্লজ্জতার চিত্র জন সমক্ষে ফুটে উঠছে। বেলুয়ার ২৫ নম্বর বুথ ১২ নম্বর জেলা পরিষদের অধিনে। এখানেই দুষ্কৃতীরা ব্যালট বাক্স ছিনতাই করেছিল’। ঘটনার নিন্দা করে বিজেপির প্রার্থী অমিত শা বলেন, ‘সরকার চাকরি চুরি, কয়লা চুরি থেকে সাধারণ মানুষের জনমতকেও চুরি করে ক্ষমতার অলিন্দে থাকতে চাইছে। আমরা বিজেপির কর্মীরা চোর সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাব’।
এই ঘটনা প্রসঙ্গে সিপিএমের জেলা সম্পাদক আনোয়ারুল হক বলেন, আমরা তো আগেই নির্দিষ্ট প্রমাণ সহ অভিযোগ করেছিলাম করনদিঘি সহ প্রতিটি ব্লকে গণনায় ব্যাপক কারচুপি করা হয়েছে। এবার আবার প্রমাণ মিলল। জেলা কংগ্রেসের সভাপতি মোহিত সেনগুপ্ত বলেন, এবারে ভোট নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে শাসক দল ও প্রশাসন। আবার প্রমাণিত হল।
উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই রাজ্যে অনুষ্ঠিত হয় ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচন। ১১ জুলাই ভোট গণনার দিন বিরোধীরা শাসক দলের বিরুদ্ধে করনদীঘি বিধানসভার ডালখোলা থানার ২৫ নং বুথের ভোট গণনা নিয়ে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ করেছিল বিরোধীরা। অভিযোগ ছিল সেই বুথ থেকে ছিনতাই হয়ে যায় পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদের তিনটি ব্যলট বক্স। যদিও প্রশাসনের তরফে সমস্ত অভিযোগ উড়িয়ে দেওয়া হয় সেদিন।