আলিপুরদুয়ার: বর্ষা আসতেই আলিপুরদুয়ারে বাড়বাড়ন্ত ডেঙ্গির। যত দিন যাচ্ছে, ততই বাড়ছে তার চোখ রাঙানি। এবছর এখনও পর্যন্ত জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তর সংখ্যা ৮১ জন। গত বছরও এই সময় জেলায় ডেঙ্গির অবস্থা একইরকম ছিল। তবে অগাস্ট মাস থেকে ছবিটা ভয়াবহ জায়গায় পৌঁছে যায়। তাই এবারের ঊর্ধ্বমুখী গ্রাফে সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছে জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর।
তবে আগাম সতর্কতামূলক সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে আশ্বাস দিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডা: সুমিত গঙ্গোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘এখনও পর্যন্ত যা পরিসংখ্যান রয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে, গতবছর থেকে সামান্য বেড়েছে ডেঙ্গি আক্রান্তর সংখ্যা। তবে এতে উদ্বেগের কোনও বিষয় নেই। যে জায়গাগুলিতে ডেঙ্গি সংক্রমণ দেখা দিচ্ছে, সেখানে স্বাস্থ্যকর্মীরা সক্রিয়। রোগ মোকাবিলায় যে গাইডলাইন রয়েছে, সেটা সবাইকে মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’
জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর, গত দু’সপ্তাহে জেলায় আক্রান্ত হয়েছেন ১৪ জন। তারাই বর্তমানের অ্যাক্টিভ রোগী। শুধু জুলাই মাসেই ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ৩৮ জন। মে মাস নাগাদ জেলায় ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ওই সময় ফালাকাটা ব্লকে বেশি সংক্রমণ দেখা দিয়েছিল। যদিও সেই সময় স্বাস্থ্য কর্তারা জানিয়েছিলেন, ওই ব্লকে যারা আক্রান্ত হয়েছেন তারা বাইরে থেকে এসেছেন। তবে বর্তমানে ফালাকাটাকে পিছনে ফেলে ডেঙ্গি আক্রান্তর সংখ্যায় শীর্ষে পৌঁছেছে মাদারিহাট বীরপাড়া ব্লক। এই ব্লকে এবছর এখনও ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন ২৮ জন। ফালাকাটা ব্লকে সংখ্যাটা ২১ জন।
গত বছরও ডেঙ্গিতে কাবু হতে হয়েছিল মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লককে। একটি ব্লকেই ৫০০ জনের বেশ ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়েছিলেন। এবছরও ওই ব্লকের রামঝোরা চা বাগানে ডেঙ্গি আক্রান্তর সংখ্যা বেশি পাওয়া যাচ্ছে। অন্যদিকে, জেলার অন্য হাসপাতালের কোনও রোগী ডেঙ্গি আক্রান্ত হয়ে ভর্তি না থাকলেও বীরপাড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতালে ৪ জন ভর্তি রয়েছেন বলে স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে খবর। জেলায় যে জায়গাগুলিতে ডেঙ্গি আক্রান্তর সংখ্যা বাড়তে দেখা যাচ্ছে, সেখানে ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে আলিপুরদুয়ার জেলা স্বাস্থ্য দপ্তর। ডেঙ্গি রোধে সচেতনার প্রচার, বাড়ি বাড়ি গিয়ে খোঁজ, বেশি রক্ত পরীক্ষা, মশার লার্ভা নষ্ট করতে স্প্রে সহ নানা পদক্ষেপ করা হয়েছে ইতিমধ্যে।