উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্ক: কেন্দ্রের কাছে বকেয়া টাকা পায়না রাজ্য, এই অভিযোগ বারবার করে থাকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সেই অভিযোগ কিছুটা লঘু করার উদ্যোগ নিল কেন্দ্র সরকার। এবার জলজীবন প্রকল্পের প্রথম কিস্তির প্রথম ভাগের কোটি কোটি টাকা দিল কেন্দ্র। জানা যাচ্ছে, রাজ্যের কাছে জলজীবন প্রকল্পে প্রথম কিস্তির প্রথম ভাগের ৯৫১ কোটি টাকা এসেছে। সুতরাং রাজ্যে এবার দ্রুত গতিতে এই প্রকল্পের কাজ হবে বলেই মনে করা হচ্ছে।
পরিসংখ্যান বলছে, এই প্রকল্পে প্রায় ১৪৯৮ কোটি টাকা খরচ হয়েছিল ২০২০-২০২১ অর্থবর্ষে। তার পরেই প্রকল্পের কাজের গতি এবং খরচ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল কেন্দ্র। ২০২১-২২ সালে সেই খরচ পৌঁছয় প্রায় ২৮৪১ কোটি টাকায়। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে খরচ আরও বেড়ে হয় প্রায় ৫৩৪৭ কোটি টাকা। চলতি অর্থবর্ষে প্রথম ছ’মাসেই খরচ হয়েছে প্রায় ৩৬৫১ কোটি টাকা। আরও ছ’মাস পরে আর্থিক বছরের শেষে তা প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছনোর লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে। কেন্দ্রের নির্দেশিকা অনুযায়ী রাজ্যকে করতে হবে প্রায় ১.৭৩ কোটি পরিবারে জল-সংযোগ। প্রায় ৬৬.৩৩ লক্ষ পরিবার জলের সংযোগ পেয়েছে রাজ্য। তাই পশ্চিমবঙ্গকে আগামী বছর মার্চের মধ্যে এক কোটি পরিবারকে জলের সংযোগ করে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্র। ২০১৯ সালে কেন্দ্র সরকার চালু করেছিল জলজীবন প্রকল্প। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য ছিল ২০২৪ সালের মধ্যে দেশের সব গ্রামীণ পরিবারে যাতে পরিস্রুত পানীয় জল পৌঁছে যায়। শুরু থেকেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই প্রকল্পে বাড়তি জোর দেওয়ার কথা বলেছিলেন। কিন্তু এই রাজ্যে এই প্রকল্পকে কেন্দ্র করে কোন অগ্রগতি দেখা যায়নি। কেন্দ্রের তরফে যে বাৎসরিক লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল তাঁর ধারেকাছেও পৌঁছয়নি জল সংযোগের কাজ। এই নিয়ে কেন্দ্র তীব্র সমালোচনা করে রাজ্যের। এমনকি এই প্রকল্পের টাকা আটকে যাওয়ার মত পরিস্থিতিও তৈরি হয়েছিল।শেষে কেন্দ্রের সঙ্গে আলোচনা করে পরিস্থিতি সামাল দেয় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দপ্তর। তবে এই জলজীবন প্রকল্পের টাকা যে সবটাই কেন্দ্র দেয় এমনটা নয়। এই প্রকল্পে অর্ধেক টাকা দেয় রাজ্য সরকার। মোট বরাদ্দের ৮০ শতাংশ খরচ করার পরেই পরের বরাদ্দের টাকা মেলে।
অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা,একশো দিনের কাজের টাকা আটকে রেখেছে কেন্দ্র এই অভিযোগে আগামী ২ ও ৩ অক্টোবর দিল্লিতে ধর্না দেবে শাসক দল। এরই মধ্যে পঞ্চদশ কমিশনের বরাদ্দের পরে জলজীবন মিশনের টাকা পাওয়াকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন অনেকেই। উল্টে অনেকে আবার মনে করছেন, বিভিন্ন প্রকল্পে কেন্দ্রের কাছ থেকে রাজ্যে টাকা আসাটাই বরং স্বাভাবিক ঘটনা।