রায়গঞ্জ: প্রায় ১০ ঘণ্টা পর ঘেরাও মুক্ত হলেন রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের (Raiganj University) উপাচার্য দীপক কুমার রায়। রায়গঞ্জ থানার পুলিশের সহায়তায় মঙ্গলবার রাত ২ টো নাগাদ নিজের বাংলোতে ফেরেন তিনি। গতকাল সকাল থেকেই নিজের দপ্তরে ঘেরাও ছিলেন তিনি। শিক্ষাকর্মী (Educational Worker) ও অতিথি অধ্যাপকদের আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি তৈরি হয়। শিক্ষাকর্মীদের অভিযোগ, উপাচার্য নিজের মর্জিমতো এস্টেট কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে বিজেপি প্রভাবিত শিক্ষক সমিতির এক অধ্যাপককে এস্টেট অফিসারের দায়িত্ব দিয়েছেন। অপর দিকে অতিথি অধ্যাপকদের অভিযোগ ছিল, উপাচার্য নিজের গড়ে দেওয়া কমিটির সিদ্ধান্ত মানছেন না। তাই তাঁদের এই আন্দোলন।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই উপাচার্যের (Vice Chancellor) কক্ষের বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন সারা বাংলা তৃণমূল শিক্ষা বন্ধু সমিতির সদস্য ও অতিথি অধ্যাপকেরা। কিন্তু চেম্বারের চারিদিকে গেট লাগিয়ে দেওয়ায় তাঁদের আন্দোলন চরম আকার নেয়। আন্দোলনকারীরা দাবি জানাতে থাকেন যে, তাঁদের সঙ্গে অবিলম্বে দেখা করতে হবে উপাচার্যকে। কিন্তু তাঁদের সঙ্গে উপাচার্য দেখা করতে চাননি বলে অভিযোগ।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায়, উপাচার্য জন্য পুলিশের সাহায্য চান। সেই অনুযায়ী রাত একটা নাগাদ সেখানে হাজির হন রায়গঞ্জ থানার পুলিশেরা। তবুও আন্দোলনকারীরা তাঁদের দাবিতে অনড় থাকেন। শেষে আগামী ২৩ ফেব্রুয়ারি অতিথি অধ্যাপক ও ২৪ ফেব্রুয়ারি শিক্ষাকর্মীদের নিয়ে উপাচার্য বৈঠক করবেন বলে লিখিতভাবে আশ্বাস দিলে তাঁকে ঘেরাও মুক্ত করেন আন্দোলনকারীরা। তৃণমূল শিক্ষা বন্ধু সমিতির জেলা সভাপতি তপন নাগ বলেন, ‘উপাচার্যকে আমরা ঘেরাও করিনি। উনি সকাল থেকে নিজেকে তালা বন্ধ করে রেখেছিলেন। বিভিন্ন দাবিতে আমরা অবস্থান বিক্ষোভ করছিলাম।আমাদের দাবি ছিল, আমাদের না জানিয়ে এস্টেট কমিটি (Estate Committee) অবৈধভাবে ভেঙ্গে দেওয়া যাবে না। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা অপচয় বন্ধ করে অস্থায়ী শিক্ষাকর্মীদের পারিশ্রমিক বৃদ্ধি করতে হবে। কিন্তু উপাচার্য আমাদের সঙ্গে দেখা করতে চাননি। শেষ পর্যন্ত আমাদের দাবি দাওয়া নিয়ে আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারী লিখিত ভাবে বসার আশ্বাস দিলে আমাদের অবস্থান তুলে নিই।’ অন্যদিকে, অতিথি অধ্যাপক (Guest Lecturer) সংগঠনের সভাপতি রাগিব আলি মিনহজ বলেন, ‘২০১৯ সাল থেকে আমরা স্যাক্টের (SACT) দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি। ইসিতে আমাদের নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এখন উপাচার্য গড়ে দেওয়া কমিটির সিদ্ধান্ত মানতে চাইছেন না। ২৩ ফেব্রুয়ারী সমস্যা না মিটলে বৃহত্তর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হব।’
এদিন জোড়া আন্দোলনে উত্তপ্ত হয়ে উঠে রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। উপাচার্য দীপক কুমার রায় বলেন, ‘সমস্যা তৈরি হলে একবারে তো সমাধান হয়না। আমরা সমাধানের চেষ্টা করছি। বিশ্ববিদ্যালয় আমাদের একার নয়। আধিকারিক, শিক্ষক ও দুই ডিনের সঙ্গে আলোচনা করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব। সব দিক খতিয়ে দেখা হবে।’