শিলিগুড়ি: গ্রিন ট্রাইবিউনালের নির্দেশ অমান্য করে এবারে মহানন্দা চর এলাকায় বিয়ের জন্য বিশাল প্যান্ডেল তৈরি হয়েছে। সেই প্যান্ডেল দেখে নদীর উলটোপাশে লালমোহন মৌলিক ঘাট দিয়ে যাওয়ার সময় অনেকেই থমকে দাঁড়িয়ে পড়েছেন। শুধু চরে বাঁশ পুঁতে প্যান্ডেল তৈরি করা নয়, প্যান্ডেলের আকার এতটাই বড় যে, নদীর মধ্যেও বাঁশ পুঁতে ওই প্যান্ডেলের ঠ্যাকনা দেওয়া হয়েছে। শহরের প্রাণকেন্দ্রে মহানন্দা নদীর চরে এমন ঘটনায় প্রশাসনের নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
বিষয়টা অবশ্য তাঁদের জানা নেই বলে দাবি করছেন ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার সহ পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র। ওয়ার্ড কাউন্সিলার সঞ্জয় পাঠকের দাবি, ‘এভাবে প্যান্ডেল হয়েছে, সেটা তো আমার জানাই নেই।’ ডেপুটি মেয়র রঞ্জন সরকারের বক্তব্য, ‘নদীকে এভাবে ইচ্ছেমতো ব্যবহার করা যায় না। এটা তো সাধারণ মানুষকে বুঝতে হবে। সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা।’
পুরনিগমের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কিরণচন্দ্র শ্মশানের পাশেই চর এলাকা বরাবর এই বিয়ের প্যান্ডেল রবিবার রাত থেকে করা শুরু হয়েছে। এদিন সকাল থেকে চর এলাকাতেই চলে রান্নাবান্না। মাছ থেকে শুরু করে মাংসের উচ্ছিষ্ট নদীর মধ্যেই ফেলতে দেখা যায়। যদিও কাদের বাড়ি অনুষ্ঠান, তা জানতে গেলে কেউ কোনও উত্তর দেননি। স্থানীয় এক পরিবারেরই বিয়ের আয়োজন এদিন ওই চর এলাকায় করা হয় বলে জানা গিয়েছে। আয়োজনে ব্যস্ত এক ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ‘বিয়ের জন্য জায়গার অভাব রয়েছে। তাই নদীর চরে করা হচ্ছে।’
কিন্তু আইন? ক্ষোভের সঙ্গে প্রশ্ন করছিলেন, লালমৌলিক ঘাটের সামনে দিয়ে চলা মৃন্ময় দাস। তিনি বলেন, ‘এত বড় আয়োজনই যদি করার হত, তাহলে কোনও হলেই করতে পারত।’ ‘এভাবে গ্রিন ট্রাইবিউনালকে (Green Tribunal) হাস্যকর পর্যায়ে নিয়ে আসার কোনও মানে আছে?’ বিয়ের প্যান্ডেল দেখে এই প্রশ্নটাই করছিলেন শহরের বাসিন্দা প্রশান্ত দাস। তাঁর কথায়, ‘শহর শিলিগুড়িতে বিয়ের অনুষ্ঠানের নামে গত কয়েকমাসে একের পর এক যা ঘটনা ঘটল তাতে স্তম্ভিত। খেলার মাঠ থেকে রাস্তা, কোনওকিছুই বাদ গেল না। শেষমেশ গ্রিন ট্রাইবিউনালের নির্দেশিকাকেও বুড়ো আঙুল দেখানো হল।’