উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ সীমান্ত পেরিয়ে ওপার বাংলার ইলিশ ঢুকছে পশ্চিমবঙ্গে। দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ এপার বাংলায় রপ্তানি করবে ৩,৯৫০ মেট্রিক টন ইলিশ। ইতিমধ্যেই বাংলার বাজারে ঢুকতে শুরু করে দিয়েছে টনে টনে ইলিশ। কিন্তু সেই ইলিশ আদৌ কি বাঙ্গালির রসনা তৃপ্তি করতে সক্ষম হচ্ছে? ব্যবসায়ীরা বলছেন অন্য কথা। বাংলাদেশের ইলিশ বাজারে ঢুকতে শুরু করলেও সেই রুপালি ফসলের দাম আমজনতার নাগালের বাইরে ইলিশের দাম। সে কারণে দীঘা কোলাঘাটের ইলিশেই আগ্রহ দেখাচ্ছে সাধারণ মানুষ। ফলে পদ্মার ইলিশে এ বার বিপুল ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। বরং ইলিশের বিক্রিতে পদ্মার চেয়ে কয়েক গুণ এগিয়ে আছে দিঘা।
দাম আকাশছোঁয়া। পদ্মার ইলিশে বাজার ছেয়ে গেলেও সেভাবে দেখা মিলছে না ক্রেতার। অনেক আশা নিয়ে এপারের ব্যবসায়ীরা প্রচুর ইলিশ আমদানি করেছেন, কিন্তু এখনও সেভাবে ইলিশের চাহিদা না থাকায় সিঁদুরে মেঘ দেখতে শুরু করেছেন তাঁরা। পদ্মার ইলিশে এ বার বিপুল ক্ষতির আশঙ্কা করছেন পাইকারী বিক্রেতারা।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালেই হাওড়ার পাইকারি বাজারে ঢোকে অন্তত ৫০ মেট্রিক টন পদ্মার ইলিশ। রাজ্যের অন্য পাইকারি বাজারগুলিতেও আমদানিকৃত ইলিশ ঢুকেছে। কিন্তু ৫দিন আগে ইলিশ ঢুকলেও চাহিদা বনেই সেভাবে। অত্যাধিক দামের কারণে ইলিশ থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছেন ক্রেতাদের একটা বড় অংশ। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, অন্য বারের তুলনায় এবার পদ্মার ইলিশের দাম পাইকারি বাজারেই ৪০০ টাকার বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে। এর ফলে খুচরো মাছ বিক্রেতারাও নিজেদের ইচ্ছেমতো দাম হাকাচ্ছেন। হাওড়া-সহ জেলার একাধিক পাইকারি আড়তে ৬০০ থেকে ৭০০ গ্রামের পদ্মার ইলিশের দাম ছিল কেজি প্রতি ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা। এক কেজি বা তার বেশি ওজনের মাছের দাম ১৬০০ থেকে ১৮০০ টাকা। অনেকেই পদ্মার এই দামি ইলিশ কিনতে চাইছেন না।
কৃষ্ণনগর পাত্র বাজারে ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের পদ্মার ইলিশের দাম কেজি প্রতি ১৭০০ থেকে ১৮০০ টাকা। বহরমপুরের স্বর্ণময়ী বাজারে এক কেজি কিংবা তার বেশি ওজনের বাংলাদেশের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ২০০০ থেকে ২২০০ টাকা প্রতি কেজিতে। ইলিশে হাতই দিতে পারছে না মধ্যবিত্ত খাদ্যরসিক বাঙালি।
বাংলাদেশের তুলনায় দিঘার ইলিশ অনেক সস্তা। মাছ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, ‘‘এবার দিঘা, ডায়মন্ড হারবার, মায়ানমার, মহারাষ্ট্র এবং গুজরাটের ইলিশের ব্যাপক আমদানি। খুচরো বাজারে এক কেজি বা তার বেশি ওজনের এই সব ইলিশের দাম কেজি প্রতি ১০০০ টাকার মধ্যে। স্বাভাবিক ভাবেই সাধারণ ক্রেতারা অতিরিক্ত টাকা খরচ করে পদ্মার ইলিশ কিনতে চাইছেন না। মৎস্য আমদানি সংগঠনের সম্পাদক সৈয়দ আনোয়ার মাকসুদ বলেন, ‘‘প্রথম দিকে মাছের দাম কিছুটা চড়া থাকবে, এটাই স্বাভাবিক। ধীরে ধীরে দাম কমবে। তবে খুব কমবে, এমন আশ্বাস আমরা দিতে পারছি না।’’