অরুণ ঝা, ইসলামপুর: ২০১৯-এর লোকসভা ভোটে (Lok Sabha Election) রায়গঞ্জ আসনে বিজেপির ২২ শতাংশ ভোট বৃদ্ধি চিন্তায় ফেলেছে তৃণমূলকে। সেবার ওই আসনে ৪০ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পেয়ে জিতেছিলেন বিজেপির দেবশ্রী রায়চৌধুরী। ৩৫ শতাংশের কিছু বেশি ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল তৃণমূল (TMC)। ২০২৪-এ ওই পাঁচ শতাংশের ঘাটতি মিটিয়ে আসনটির দখল নিতে মরিয়া তৃণমূল। তাদের উদ্বেগ বাড়িয়েছে কংগ্রেস (Congress) ও সিপিএমের (CPM) মিলিত প্রায় ২১ শতাংশ ভোট। এই ভোটের বড় অংশ নিজেদের কুক্ষিগত করতে তৃণমূল হিসাব কষে এগোচ্ছে। বসে নেই বিজেপিও। তাদের নজরেও রয়েছে ওই ২১ শতাংশ ভোট। শতাংশের বিচারে তৃণমূল পিছিয়ে থাকার কথা স্বীকার করেছে। কিন্তু রায়গঞ্জ লোকসভা আসনে তাদের বুথ স্তর পর্যন্ত সংগঠন থাকায় বিরোধীদের দাবিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ নেতৃত্ব।
১৬তম লোকসভা নির্বাচন অর্থাৎ ২০১৪ সালে রায়গঞ্জ (Raiganj) সিপিএমের দখলে ছিল। সেসময় সিপিএম পেয়েছিল ২৯ শতাংশ ভোট। কংগ্রেস পায় ২৮.৫ শতাংশ ভোট। বিজেপি ও তৃণমূলের ঝুলিতে ঢুকেছিল যথাক্রমে ১৮.৩২ শতাংশ ও ১৭.৩৯ শতাংশ ভোট। ২০১৯-এ বিজেপি পাঁচ লক্ষ ১১ হাজার ৬৫২টি অর্থাৎ ৪০.০৮ শতাংশ ভোট পেয়েছিল। তৃণমূল চার লক্ষ ৫১ হাজার ৭৮টি অর্থাৎ ৩৫.৩২ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল। সিপিএম পায় এক লক্ষ ৮২ হাজার ৩৫টি (১৪.২৫ শতাংশ) ভোট। আর কংগ্রেস পায় ৮৩ হাজার ৬৬২টি (৬.৫৫ শতাংশ) ভোট। ২০১৪-র ফলের সঙ্গে ২০১৯-এর ফলের বিচারে লক্ষণীয়, কংগ্রেস প্রায় ২২ শতাংশ ও সিপিএম প্রায় ১৫ শতাংশ ভোট হারায়। সেখানে বিজেপি ও তৃণমূলের ভোট বাড়ে যথাক্রমে প্রায় ২২ শতাংশ ও প্রায় ১৮ শতাংশ।
রায়গঞ্জে তৃণমূলের প্রথম সারির নেতারাই জানান, ২০১৯-এ পুলওয়ামা ও বালাকোট ইস্যুতে দেশে জাতীয়তাবাদের ঝড় উঠেছিল। কিন্তু এবার এখনও আলাদা অঙ্ক। বিজেপির দাবি, রাম মন্দির, ৩৭০ ধারার অবলুপ্তি, তিন তালাক আইন প্রণয়ন সহ সিএএ কার্যকরের ঘোষণা মোদির প্রতি মানুষের ভরসা আরও বাড়িয়েছে।
এপ্রসঙ্গে রায়গঞ্জ আসনের বাম-কংগ্রেস জোটের প্রার্থী আলি ইমরান রমজ ওরফে ভিক্টর বলেন, ‘জোটের ২১ শতাংশ ভোটে বিজেপি, তৃণমূলের দাঁত ফোটাতে অক্ষম। উলটে ওদের হাল দেখে হতাশ মানুষ আমাদের উপর ভরসা করতে শুরু করেছে। সংগঠন ছাড়াই মানুষ ওদের বিরুদ্ধে সংগঠিত হয়েছে।’ বিজেপি প্রার্থী কার্তিকচন্দ্র পাল বলেন, ‘২০১৯-এ আমরা ৪০ শতাংশ ভোট পেয়েছিলাম। এবার তা আরও বাড়বে। আমাদের লক্ষ্য বিরোধী ভোটব্যাংকও।’ এব্যাপারে তৃণমূলের জেলা সভাপতি কানাইয়ালাল আগরওয়াল বলেন, ‘২০১৯-এর পাঁচ শতাংশ ঘাটতি টপকে বিজেপিকে টেক্কা দেব। জোট যে ২১ শতাংশ ভোট নিয়ে অঙ্ক কষছে সংগঠন থাকলে তো সেই ভোট ধরে রাখবে। তৃণমূলেরই শুধুমাত্র বুথ স্তর অবধি সংগঠন রয়েছে। ফলে, রায়গঞ্জে এবার বিরোধীদের হার নিশ্চিত।’