শিলিগুড়ি: জট কাটল অবশেষে। সোমবার খুলতে চলেছে বাগডোগরার (Bagdogra) ত্রিহানা চা বাগান (Trihana Tea Garden)। শনিবার দাগাপুরের শ্রমিক ভবনে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের মধ্যে দিয়ে যাবতীয় সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। যুগ্ম শ্রম কমিশনার পার্থপ্রতিম চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে দুই দফায় যাবতীয় বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বাগানে পুনরায় যাতে অশান্তির ঘটনা না ঘটে, তার জন্যও মালিক এবং শ্রমিকপক্ষকে সতর্ক এবং সচেতন থাকার নির্দেশ যুগ্ম শ্রম কমিশনার দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে।
বাগান খোলার খবরে স্বাভাবিকভাবে খুশি শ্রমিক পরিবারগুলি। শ্রমিক অশান্তির জেরে গত ৯ নভেম্বর সাসপেনশন অফ ওয়ার্কের নোটিশ ঝুলেছিল ত্রিহানায়। যুগ্ম শ্রম কমিশনার বলেন, ‘বকেয়া বোনাস এবং মজুরি দুই কিস্তিতে মিটিয়ে দিতে রাজি হয়েছে মালিকপক্ষ। হোলির আগেই প্রথম কিস্তির টাকা শ্রমিকরা পেয়ে যাবেন। সৌহার্দ্য পরিবেশে এদিন বৈঠক হয়েছে এবং সোমবার বাগানটি খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’
মোহনলাল, জাবরা এবং ত্রিহানা, একই মালিক গোষ্ঠীর তিনটি চা বাগান বন্ধ হয়েছিল একই সময়ে। প্রত্যেকটি ক্ষেত্রেই সামনে চলে আসে শ্রমিক অসন্তোষের বিযয়টি। জাবরা এবং মোহনলাল ইতিমধ্যেই খুলেছে। শনিবার ত্রিপাক্ষিক এক বৈঠকের মধ্যে দিয়ে ত্রিহানা চা বাগানও খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। শ্রম দপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগান খোলার ক্ষেত্রে শ্রমিকদের বোনাস এবং মজুরি দ্রুত মিটিয়ে দেওয়ার দাবি তোলে শ্রমিক সংগঠনগুলি। বকেয়া মিটিয়ে দেওয়ার ব্যাপারে সম্মত হলেও পুরো টাকা এক কিস্তিতে দেওয়া যে তাঁদের পক্ষে সম্ভব নয়, তা স্পষ্ট করে দেয় মালিকপক্ষ। যুগ্ম শ্রম কমিশনার দুই কিস্তির প্রস্তাব দেন। যা মেনে নেয় মালিক এবং শ্রমিকপক্ষ। ত্রিহানা চা বাগানের ডিরেক্টর বিমল ঝাওয়ার বলেন, ‘ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আমরা বোনাস এবং মজুরির প্রথম কিস্তির টাকা হোলি বা ২৪ মার্চের মধ্যে মিটিয়ে দেব। বাকি টাকা দেওয়া হবে ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে।’
এদিনের বৈঠকে ১৮ শতাংশ পুজো বোনাস দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে বাগান বন্ধের আগে ৬ শতাংশ কর্তৃপক্ষ দিয়েছিল। ফলে বকেয়া রয়েছে ১২ শতাংশ। যার মধ্যে ৭ শতাংশ দেওয়া হবে হোলির আগে।
বৈঠকে উপস্থিত টি অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ার সচিব সুমিত ঘোষ বলেন, ‘আশা করব শান্তিশৃঙ্খলা বজায় থাকবে এবং মালিকপক্ষ কোনওরকম সমস্যায় পড়বে না।’ শ্রমিক স্বার্থে বাগান সচল রাখার ক্ষেত্রে তাঁরা সবরকম সহযোগিতা করবেন বলে আশ্বাস দেন তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের নির্জল দে সহ সমস্ত শ্রমিক নেতা।