শুভদীপ শর্মা, ময়নাগুড়ি: অক্টোবর মাসে সিকিমে হ্রদভাঙা বৃষ্টির জেরে তিস্তার জলে এসে মিশেছে বিভিন্ন রাসায়নিক। আর তার জেরেই উর্বরতা হারিয়েছে তিস্তার বিভিন্ন চর। যার প্রভাব পড়ছে চাষাবাদেও। বিভিন্ন ফসল জন্মাবার পরও সেগুলো হলুদ হয়ে যাচ্ছে, মরে যাচ্ছে। পাশাপাশি তিস্তার মূল বাঁধের অবস্থাও বেহাল। দ্রুত তা সংস্কার না করলে বর্ষায় বাঁধ ভেঙে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। দু’দিন ধরে ময়নাগুড়ি কলেজের ভূগোল বিভাগের তরফ থেকে কলেজের অধ্যাপক, অধ্যাপিকা সহ ফোর্থ ও সিক্সথ সিমেস্টারের (Semester) ছাত্রছাত্রীরা তিস্তা নদীর (Teesta River) বিস্তীর্ণ এলাকায় সমীক্ষা করে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন। সমীক্ষার তথ্য প্রশাসনের হাতেও তুলে দেওয়া হবে বলে, কলেজ সূত্রে খবর।
এই প্রাকৃতিক বিপর্যয় কীভাবে পরিবেশের উপরে আঘাত হানতে পারে, তা হাতেকলমে ছাত্রছাত্রীদের বোঝাতেই ময়নাগুড়ি কলেজের ভূগোল (Geography) বিভাগের উদ্যোগে একটি সমীক্ষার আয়োজন করা হয়েছিল। কলেজের ভূগোলের ফোর্থ ও সিক্সথ সিমেস্টারের মোট ৭০ জন ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে বন্যাকবলিত ময়নাগুড়ি ব্লকের দোমোহনি ও ক্রান্তি ব্লকের চাপাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিস্তীর্ণ এলাকায় গত দু’দিন ধরে একটি সমীক্ষা (Survey) করা হয়। কলেজের ভূগোল বিভাগের প্রধান মধুসূদন কর্মকার জানান, দুই ব্লকের প্রায় দেড়শোজন কৃষকের ওপর করা এই সার্ভেতে দেখা গিয়েছে বন্যার পর তিস্তা লাগোয়া বিভিন্ন জমিতে সবজি লাগানো হলেও সেই গাছ বাড়ছে না। কিছুটা বড় হওয়ার পরেই হলুদ হয়ে গাছগুলো মরে যাচ্ছে। ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন এলাকার কৃষকরা। মধুসূদনের যুক্তি, গত অক্টোবর মাসে তিস্তার ভয়াবহ বন্যায় বিভিন্ন রাসায়নিক সামগ্রী (Chemicals) ভেসে এসে মিশেছে তিস্তার জলে। যার জেরে এই মাটি তার উর্বরা শক্তি হারিয়েছে। দেখা দিয়েছে নাইট্রোজেনের ঘাটতি।
ময়নাগুড়ি কলেজের অধ্যক্ষ দেবকুমার মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ভূগোল বিভাগের পঠনপাঠনের অঙ্গ হিসাবেই এই সমীক্ষা করা হয়েছে। তার জেরেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। এই সমীক্ষা রিপোর্ট (Report) নিশ্চয় প্রশাসনের কাজে লাগবে বলে আশাবাদী তিনি।