গৌরহরি দাস, কোচবিহার: এক পক্ষের মান–অভিমানের পালাকে আরেকপক্ষের কাজে লাগানোর চেষ্টা।
উত্তরবঙ্গ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হচ্ছে না বলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শা তাঁকে ফোন করে জানিয়েছেন বলে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ নগেন রায় সোমবার জানান। পাশাপাশি, দলে তাঁকে সেভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না বলেও প্রকাশ্যে জানিয়েছিলেন। এনিয়ে সেদিন থেকেই রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক হইচই। পদ্ম শিবিরের সঙ্গে যে তাঁর দূরত্ব হালে অনেকটাই বেড়েছে তা নগেনের বক্তব্যে অনেকটাই পরিষ্কার। নগেনপন্থী গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের (জিসিপিএ) ভোট অন্যান্যবার বিজেপির ঝুলিতে পড়লেও এবারে তা নিয়ে যে সংশয় রয়েছে তা নগেন বেশ বুঝিয়ে দিয়েছেন। এই পরিস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেস মাঠে নেমেছে। সূত্রের খরর, নগেনের প্রতিনিধির মাধ্যমে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।
বুধবার তৃণমূলের কোচবিহার জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি পোস্ট করেন। তাতে তিনি লিখেছেন, ‘কে সত্য আর কে মিথ্যা জানি না। তবে বিজেপি আর অনন্ত রায়ের (নগেন) মধুচন্দ্রিমা শেষ হল বলেই মনে হয়।’ সেই পোস্টের নীচে তিনি আরও লেখেন, ‘আসুন এবার ভোট অন্তত জাতপাতের নামে, ভাষা-বর্ণের নামে না করে শুধু উন্নয়নের নামে হোক।’ নগেনপন্থীর সঙ্গে যোগাযোগ বা তাঁদের ভোটের প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে অভিজিৎ অবশ্য বলেন, ‘নগেনের বিরোধী জিসিপিএ গোষ্ঠী রাজ্য সরকারের সঙ্গে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করতে চায়। তাদের সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে। আর ইদানীং নগেনের নীতির বিষয়টিও রাজ্য সরকার ভালোমতো জানে। ওপর থেকে যেভাবে নির্দেশ আসবে, আমরা সেইমতোই কাজ করব।’ বিজেপির কোচবিহার জেলা সভাপতি সুকুমার রায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বললেন, ‘গুরুতর কিছুই হয়নি। সামান্য একটি বিষয়কে সংবাদমাধ্যম ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে বিরাট বড় করে দেখাচ্ছে। নগেন রায় কোচবিহারে ফিরুন। তাঁর সঙ্গে আমরা কথা বলব।’
বৃহত্তর ভোটব্যাংকের স্বার্থে দেশভাগ ইস্যুতে বিজেপি এবারে চুপ। তবে নগেনপন্থী জিসিপিএ বরারবই এই ইস্যুতে সরব। সোমবার সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলার সময় নগেন বলেছিলেন, বিজেপি তাঁকে ব্যবহার করে ডাস্টবিনে ফেলে দিয়েছে। অতীতে নানা ভোটে নগেনপন্থী জিসিপিএ’র ভোটে বিজেপি অনেকটাই লাভবান হয়েছে। সাম্প্রতিক পরিস্থিতির জেরে এবারের নির্বাচনে সেই ভোট বিজেপির দিকে যাওয়া নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তৃণমূল পরিস্থিতির সুযোগ তুলতে সচেষ্ট হয়েছে বলে রাজনৈতিক মহলের ধারণা।