উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ মঙ্গলবার লোকসভায় অনাস্থা বিতর্ক শুরু হওয়ার আগেই রাজ্যসভায় সাসপেন্ড করা হল তৃণমূলের সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েনকে। রাজ্যসভার অধিবেশনে বিশৃঙ্খল আচরণের অভিযোগে ডেরেককে সাসপেন্ড করা হয়েছে। সাসপেন্ড করেন জগদীপ ধনকড়।
মঙ্গলবার সকাল থেকেই মণিপুর ইস্যুতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্যসভার অধিবেশন। রাজ্যসভার ভিতরে এই ইস্যুতে তুমুল হট্টগোলে দুপুর ১২টা পর্যন্ত মুলতুবি হয়ে যায় বাদল অধিবেশন। জানা গিয়েছে, এদিন মণিপুর কাণ্ডে অনাস্থা প্রস্তাব আনার কথা ছিল বিরোধীদের। অনাস্থা প্রস্তাব আনার আগেই শুরু হয়ে যায় তর্ক বিতর্ক। তারপরেই অসংসদীয় আচরণের অভিযোগে তাঁকে বাদল অধিবেশনের পুরো সময়ের জন্য সাসপেন্ড করে দেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ধনকড়।
এর আগে সোমবারও ধনকড়ের সঙ্গে প্রবল কথা কাটাকাটিতে জড়িয়ে পড়েছিলেন ডেরেক। সেদিন রাজসভায় দিল্লি অধ্যাদেশ বিলের বিরোধিতায় বক্তব্য রাখছিলেন তিনি। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগও তিনি জুড়ে দিয়েছিলেন সেই বক্তব্যে। তাঁকে বক্তব্য সংক্ষিপ্ত করার জন্য অনুরোধ করেন চেয়ারম্যান। যদিও তাতে কান না দিয়ে কথা চালিয়ে যান ডেরেক। ডেরেকের জবাব, ‘এটা রাজনৈতিক কক্ষ, আমরা রাজনৈতিক বিষয় তুলে ধরবই।’ এরপর ডেরেক বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নিজেকে গণতন্ত্রের সন্তান বলে দাবি করেন, তাহলে গণতন্ত্র খর্ব করতে চাইছেন কেন? গণতন্ত্রের সন্তান কেন সংসদে এসে নিশ্চিত করান যাতে দুই-তৃতীয়াংশ বিলই অগণতান্ত্রিক পদ্ধতি পাশ করানো যায়?’ তিনি প্রশ্ন তোলেন, উচ্চশিক্ষা খাতে বাজেটে ৪০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হলেও কেন বাংলার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে মাত্র ৭০০ কোটি টাকা দেওয়া হচ্ছে? প্রশ্ন তোলেন রাজ্যে মহিলাদের উপর হিংসা এবং ভোট পরবর্তী হিংসার ঘটনায় কেন্দ্রের প্রতিনিধি দল পাঠানো নিয়েও।
এতেই রেগে যান উপরাষ্ট্রপতি তথা রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ধনকড়। ধমকের সুরে তিনি বলেন, ‘এটা আপনার অভ্যাসে পরিণত হয়েছে।’ বাইরে জনপ্রিয়তা পাওয়ার লোভেই তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে সংসদে তাণ্ডব করছেন বলে দাবি করেন ধনকড়। উত্তপ্ত কথা কাটাকাটির মাঝেই তিনি ডেরেকের উদ্দেশে প্রশ্ন ছুড়ে দেন, ‘আপনি কি এখানে নাটক করতে এসেছেন?’
সোমবারের এই ঘটনার পর মঙ্গলবারও অধিবেশনের শুরুতেই গোলমাল বাঁধে মণিপুর ইস্যুতে। ফের ধনকড়ের সঙ্গে তুমুল বাকবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন ডেরেক। তারপরেই অসংসদীয় আচরণের অভিযোগে তাঁকে বাদল অধিবেশনের পুরো সময়ের জন্য সাসপেন্ড করে দেন রাজ্যসভার চেয়ারম্যান ধনকড়।