কোচবিহার: অন্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের থাকতে দেওয়া হলেও রবিবার রাত ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত তাঁদের দলের প্রতিনিধিদের তাড়িয়ে দিয়ে স্ট্রংরুমে দু’ঘণ্টা ধরে কী করা হল তা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস প্রশ্ন তুলেছে। ওই সময়কালের সিসিটিভি ফুটেজ সামনে আনার দাবিতে তারা সরব হয়েছে। এ বিষয়ে তারা ইতিমধ্যেই জেলা রিটার্নিং অফিসার তথা কোচবিহারের জেলা শাসককে চিঠি দিয়েছে। পাশাপাশি, বিষয়টি তারা দলের রাজ্য নেতৃত্বকেও জানিয়েছে। গোটা বিষয়টি নিয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিৎ দে ভৌমিক তথা হিপ্পি সোমবার দুপুরে কোচবিহারে দলের জেলা কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন।
হিপ্পি বলেন, ‘রাত ১১টা থেকে ১টা পর্যন্ত দু’ঘণ্টা আমাদের প্রতিনিধিদের সরিয়ে দিয়ে স্ট্রংরুমে কী করা হল? আমাদের ধারণা কেন্দ্রীয় বাহিনীর পোশাকে সেসময় কেউ স্ট্রংরুমে ঢুকে কোনও কারচুপি করতে পারে। এবিষয়ে সংশিষ্ট আধিকারিককে জানানো হয়েছে।’ ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে উদ্বেগ ছড়িয়েছে। বিরোধীরা বিষয়টি নিয়ে শাসক শিবিরকে কটাক্ষ করেছে। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক বিরাজ বসু বলেন, ‘তৃণমূলের সবকিছুই হাস্যকর। ওরা জেতার আগেই বিজয় মিছিল করে। আসলে তৃণমূল বুঝে গিয়েছে এই কেন্দ্রে ওদের হার নিশ্চিত। তাই আগে থেকে ওরা এরকম কাঁদুনি গাইছে।’ ফরওয়ার্ড ব্লকের জেলা সভাপতি দীপক সরকারের প্রতিক্রিয়া, ‘আমাদের কাছে হিপ্পির অভিযোগের কোনও গুরুত্বই নেই।’
সাংবাদিক বৈঠকে হিপ্পি বলেন, ‘কোচবিহারের পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট ও ইউনিভার্সিটি বিটি অ্যান্ড ইভনিং কলেজ স্ট্রংরুমে কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রের সাতটি বিধানসভা কেন্দ্রের ভোটের ইভিএম মেশিন রয়েছে। গোটা এলাকাটাই সিসিটিভির নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বিটি অ্যান্ড ইভনিং কলেজে তার মনিটর রাখা রয়েছে। সেই মনিটরের সামনে তৃণমূল, বিজেপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা রয়েছেন। আমরা তিন শিফটে দুজন করে সদস্যকে ওখানে রেখেছি। কোন শিফটে কখন আমাদের কোন সদস্য থাকবেন সেই তালিকাও সেখানকার আধিকারিকদের কাছে দেওয়া রয়েছে। রবিবার রাত ১১টায় যখন আমাদের সদস্য পরিবর্তন হচ্ছিল, নতুন করে কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না বলে নতুন শিফটের সদস্যদের জানানো হয়। পুরোনো শিফটের সদস্যরা সেখানে থেকে যেতে চাইলে তাঁদের থাকতে দেওয়া হয়নি। কেন্দ্রীয় বাহিনীর সদস্যরা তাঁদের অশ্রাব্য গালিগালাজ, দলের নামে কটূক্তি করেন। এক আধিকারিক সেই সময় মদ্যপ অবস্থায় ছিলেন।’
তৃণমূল কর্মীরা ডিসিআরসির সামনে বিক্ষোভ দেখান। হিপ্পি বলেন, ‘আমি রাত দেড়টা নাগাদ বাড়ি থেকে সেখানে রওনা হই। আমাদের কর্মীদের সরিয়ে দেওয়া হলেও বিজেপির কর্মীদের কেন সেখানে থাকতে দেওয়া হল বলে প্রশ্ন করা হলে কেন্দ্রীয় বাহিনী লাঠি নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমাদের কয়েকজন কর্মী অল্পবিস্তর আহত হয়েছেন। আমি সেখানে গেলে আমার পরিচয় জানতে চাওয়া হয়। আমি পরিচয় দিই। কোনও গণ্ডগোল হলে তারা গুলি চালাবে বলে কেন্দ্রীয় বাহিনী সরাসরি আমাকে হুমকি দেয়।’ তৃণমূলের জেলা সভাপতির কথায়, ‘কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী এখানে হেরে বসে আছেন। তাই এই ৪০ দিন তিনি চুপচাপ বসে থাকবেন না। আর এই সূত্রেই কারচুপি করা হয়েছে বলে আমাদের ধারণা। গত বিধানসভা নির্বাচনেও দিনহাটায় ইভিএমে কারচুপি করে উদয়ন গুহকে হারানো হয়।’