গৌতম সরকার, চ্যাংরাবান্ধা: পদ একটি। কিন্তু দাবিদার অনেক। নিজেদের মধ্যেই পদ নিয়ে কাড়াকাড়ি। তাই একক সংখ্যাগরিষ্ঠ পেয়েও স্বস্তিতে নেই তৃণমূল। এনিয়ে গোষ্ঠীকোন্দল ফের প্রকাশ্যে উঠে আসছে বলে দলীয় সূত্রেই খবর। তাদের কথায়, দলের জয়ী প্রার্থীদের আগলে রাখতে তাই এবার ময়দানে নেমেছেন মেখলিগঞ্জের বিধায়ক পরেশচন্দ্র অধিকারী। পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের আগে কোনওরকম ঝুঁকি নিতে নারাজ পোড়খাওয়া এই নেতা পরেশবাবু।
মেখলিগঞ্জ ব্লকের চ্যাংরাবান্ধা গ্রাম পঞ্চায়েতে তৃণমূলের জয়ী সদস্যের সংখ্যা ১৬। বোর্ড গঠনের আগে সংখ্যাগরিষ্ঠ জয়ী সদস্যদের নিয়ে আত্মগোপনের অভিযোগ উঠেছে এলাকার বিধায়ক পরেশচন্দ্র অধিকারীর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। এই ঘটনাকে ঘিরে ব্লক জুড়ে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক চাঞ্চল্যও ছড়িয়ে পড়েছে। তৃণমূলেরই পরেশ বিরোধী গোষ্ঠীর লোকজনের অবশ্য দাবি, জয়ী পঞ্চায়েত সদস্যদের একাংশের পছন্দ নয় পরেশের অনুগামী কেউ একজন পঞ্চায়েত প্রধান হোক। কিন্তু সেই পঞ্চায়েতকে প্রধান পদে বসাতেই বিধায়কের নির্দেশে ওই পঞ্চায়েত সদস্য বাকিদের কৌশলে তুলে নিয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। দলীয় পঞ্চায়েত সদস্যদের আত্মগোপনের কথা স্বীকারও করে নিয়েছেন বিধায়ক। তবে প্রধান পদ নিয়ে টানাপোড়েন অবশ্য তিনি মেনে নেননি। পরেশের সাফ দাবি, প্রধান কে হবেন, তা দল ঠিক করবে। পঞ্চায়েতরা স্বেচ্ছাতেই নাকি আত্মগোপন করেছেন। কেউ কেউ এনিয়ে অযথা জলঘোলা করছেন।
বিষয়টি নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের মেখলিগঞ্জ ব্লকের প্রাক্তন সভাপতি তথা বর্তমানে দলের কোচবিহার জেলা সহ সভাপতি লক্ষ্মীকান্ত সরকারের বক্তব্য, “পরেশবাবুর ঘনিষ্ঠ যাকে প্রধান করতে চাইছেন তাঁর অনুগামীরা সেটা দলের অধিকাংশ পঞ্চায়েত সদস্যই মানতে চান না। নিজের পছন্দের লোককে প্রধান পদে বসাতেই পরেশবাবু এসব করছেন বলে দলের অনেক কর্মী আমাকেও জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে জেলা নেতৃত্বেরও দৃষ্টি আকর্ষণ করা হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, মেখলিগঞ্জের চ্যাংরাবান্ধা গ্রামপঞ্চায়েতের মোট আসন ২২টি। এবারের নির্বাচনে বিজেপি চারটি আসনে জয়লাভ করে। ১৬ টি আসনে জয়লাভ করেছে তৃণমূল। ১টি ফরওয়ার্ড ব্লক ও একটি নির্দলের ঝুলিতে যায়। যদিও পরবর্তীতে ফরওয়ার্ড ব্লকের জয়ী প্রার্থী তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
তৃণমূলের জয়ী ১৬ জনের মধ্যে ১০ জন গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যকে নিয়ে এলাকা থেকে উধাও হয়ে গিয়েছে তৃণমূলের একাংশ। যদিও পরেশ ঘনিষ্ঠদের দাবি, আরও দুজন পঞ্চায়েত সদস্য আত্মগোপনে গিয়েছেন। সব মিলিয়ে তৃণমূলের ১২ জন সদস্য আত্মগোপন করে রয়েছেন।