উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ গত সাড়ে চার মাসে কুনোর অরণ্যে মারা গিয়েছে ৯টি চিতা। পরপর চিতা মৃত্যুর কারণ কী, জানতে চেয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সম্প্রতি চিতা মৃত্যুর সম্ভাব্য কারণ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে রিপোর্ট পাঠিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা এবং নামিবিয়ার চিতা বিশেষজ্ঞেরা। চিতা মৃত্যুর ঘটনা তেমন উদ্বেগের নয় বলে সাফাই দিয়েছিল কেন্দ্র। সুদূর নামিবিয়া থেকে চিতা গুলোকে ভারতে আনা হয়েছে। জায়গা বদলের কারণেও এমনটা ঘটতেই পারে। এমনকি শীর্ষ আদালতে কেন্দ্র দাবি করেছে চিতা-প্রজেক্ট ভালোই চলছে।
গত সাড়ে চার মাসে কুনোর অরণ্যে ৯টি চিতা মৃত্যুর ঘটনা নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা হয় সুপ্রিম কোর্টে। সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি বিআর গাভাইয়ের নেতৃত্বে তিন বিচারপতির বেঞ্চে মামলা চলছে। সোমবার সরকারপক্ষের আইনজীবী ঐশ্বর্য ভাটি আদালতে বলেন, “আফ্রিকা থেকে এত বছর পরে চিতা ভারতে আনা হয়েছে। একটা ঐতিহাসিক প্রকল্প নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। স্থান বদল হলে এমন ঘটনা ঘটতেই পারে, তাতে বিশেষ চিন্তার কিছু নেই।” সেই সঙ্গেই আইনজীবী আরও দাবি করেন, কুনোতে ৬টি চিতার মৃত্যু হয়েছে এখনও অবধি, মিডিয়া সেই সংখ্যাকে বাড়িয়ে ৯ দেখাচ্ছে।
এদিকে কুনোর জঙ্গলে পরপর চিতা মৃত্যুর ঘটনায় গুরুত্ব সহকারে দেখে মৃত্যুর কারণ খুঁজতেও নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এর মধ্যেই দক্ষিণ আফ্রিকার পশুচিকিৎসা ও বন্যপ্রাণী বিভাগের বিশেষজ্ঞরা রিপোর্ট পাঠিয়ে দাবি করেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের চিতা সংরক্ষণ পদ্ধতিতে বেশ কিছু ত্রুটি রয়েছে। বিজ্ঞানীরা দাবি করেন, কুনো জাতীয় উদ্যানে ৫০টি দূরের কথা ২০টি চিতার স্বচ্ছন্দ বসবাসেরও সুযোগ নেই। এ ছাড়া কুনোর জঙ্গলে চিতাদের শিকার করে খাওয়ার মতো পর্যাপ্ত হরিণ বা বনশুয়োর নেই। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে বিচারপতি গাভাই চিতা মৃত্যুর কারণ জানতে চান কেন্দ্রের কাছে। অন্য কোনও অভয়ারণ্যের বদলে কেন আফ্রিকা থেকে আনা চিতাদের এক জায়গায় রাখা হয়েছে, সে প্রশ্নও তোলেন বিচারপতি গাভাই।
উল্লেখ্য, নামিবিয়া থেকে আনা চিতা ও কুনোতে পরবর্তী সময়ে জন্ম নেওয়া চিতা শাবক মিলিয়ে মোট ২৪টি আফ্রিকান চিতা ছিল জাতীয় উদ্যানে। পর পর ৯টি চিতার মৃত্যু হওয়ার পর বর্তমানে সেখানে রয়েছে ১৫টিতে। ফিন্ডা নামে একটি পুরুষ চিতার আক্রমণে মৃত্যু হয়েছে নামিবিয়া থেকে আনা ৫ বছরের স্ত্রী চিতা শাসার। ২৪ এপ্রিল মারা যায় দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা পুরুষ চিতা উদয়। কুনোর এই চিতার মৃত্যুর কারণ, কার্ডিয়ো পালমোনারি ফেলিওর। পুরুষ চিতার সঙ্গে সঙ্গমের পরে মৃত্যু হয় স্ত্রী চিতা দাক্ষার। মৃত চিতাদের মধ্যে শাবকও আছে। নামিবিয়া থেকে আনা একটি মহিলা চিতা যে ৪টি শাবকের জন্ম দিয়েছিল, তারই ১টি মারা গেছে। পশু চিকিৎসকের দাবি, মারাত্মক ডিহাইড্রেশনের কারণেই মৃত্যু হয়েছে।