হেমতাবাদঃ উত্তর দিনাজপুর জেলার তুলাইপাঞ্জি চালের দেশজুড়ে সুনাম রয়েছে। এবার এই চালকেই ভোট প্রচারে হাতিয়ার করেছে শাসকদল তৃণমূল। রায়গঞ্জ ব্লকের মোহিনীগঞ্জ, হেমতাবাদ ব্লকের চারটি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা সহ সংলগ্ন এলাকায় এই চাষ বেশি হয়। দাম কম পাওয়ায় একটা সময় চাষিরা এই ধানের চাষ থেকে সরে আসছিলেন। পরবর্তীকালে প্রশাসন ও কৃষি দপ্তর উদ্যোগ নিয়ে এর চাষে সাফল্য পায় চাষিরা। আগের তুলনায় এখন অনেক বেশি কৃষক এই তুলাইপাঞ্জি চাষের দিকে ঝুঁকেছেন। আর এই বিষয়কেই হাতিয়ার করে লোকসভা নির্বাচনে প্রচারে নেমেছে তৃণমূল কংগ্রেস।
তৃণমূলের দাবি, তুলাইপাঞ্জি চাষকে রক্ষা করার জন্য আগে কেউ কোনও পদক্ষেপ করেনি। তাদের আমলেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। যদিও কংগ্রেসের দাবি, পঞ্চায়েত সমিতিতে ক্ষমতায় থাকায় তারাও তুলাইপাঞ্জির চাষকে এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। উত্তর দিনাজপুর জেলা পরিষদের সভাধিপতি পম্পা পাল বলেন, “তুলাইপাঞ্জি আমাদের জেলার গর্ব। বর্তমান সরকারের আমলের উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য অনেকগুলি পদক্ষেপ করা হয়েছে। বর্তমানে চাষের অনেক উন্নতি হয়েছে। বহু মানুষ এই চাষের সঙ্গে আবার যুক্ত হচ্ছেন। আমরা বিষয়টিকে প্রচারে নিয়ে এসেছি।”
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, স্বর্ণ জয়ন্তী দল, ফার্মাস ক্লাব গঠন, সবলা মেলা, কৃষিমেলায় তুলাইপাঞ্জি চাল বিক্রির ব্যবস্থা করা হয়েছে। এরফলে এই চাষে উৎসাহ বেড়েছে। সেই কথাও মানুষের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে।
রায়গঞ্জের মহিপুর ও বিন্দোল গ্রাম পঞ্চায়েতের কয়েকটি গ্রাম নিয়ে মোহিনীগঞ্জ এলাকা। রয়েছে মোহিনীগঞ্জ হাট। এছাড়াও ওই এলাকার ভগৎগাঁও, লক্ষণীয়া, বালিয়াদিঘি, বিন্দোল, পরিহারপুর, পারিয়াল, সনগাঁও, ভগীলতা, মহিপুর, কেশরা, চৈনগর, বিষ্ণুপুর, হেমতাবাদ, বাঙালবাড়ি, নওদা গ্রাম সহ প্রভৃতি গ্রামেও তুলাইপাঞ্জি ধানের চাষ হয়। স্বাদে ও গন্ধে অতুলনীয় তুলাইপাঞ্জি চালের সুখ্যাতি দীর্ঘদিন ধরেই রয়েছে। কিন্তু কয়েক বছর আগেও এই চাষের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন মেরে কেটে ৫০০ জন কৃষক। চাষের এলাকাও কমে এসেছিল। বর্তমানে এলাকা সম্প্রসারণ করে ৩৫০০ বিঘা জমিতে এই চাষ হচ্ছে। ৪ হাজার ৫০০ চাষি এই চাষের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। বিনামূল্যে বীজ বিলি, জৈব পদ্ধতিতে চাষ, উৎপাদিত চাল বিভিন্ন মেলায় পাঠিয়ে বিক্রির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। তৃণমূলের দাবি, সরকারের পক্ষ থেকে এসব উদ্যোগ নেওয়ার কারণেই চাষিরা চাষে এগিয়ে আসছেন। ভোটপ্রচারে তারা। একথাই বলছে।