উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ মিষ্টিমুখ করে নয়, একে অপরকে কাদা ছুড়ে বিজয়া দশমীর শুভেচ্ছা জানান স্থানীয়রা। এমনই অদ্ভূত রীতি বাঁকুড়ার ঝগড়াই গ্রামে। গত দুশো বছর ধরে চলছে এই কাদা ছোড়ার রীতি।
জানা গিয়েছে, বাঁকুড়ার ঝগড়াই গ্রামে রয়েছে ভঞ্জনি দেবীর মন্দির। এই গ্রামে বিজয়ার শুভেচ্ছা বিনিময়ের এক অদ্ভূত রীতি রয়েছে। গ্রামের ভঞ্জনি দেবীর মন্দিরের সামনে প্রচুর মাটি ফেলা হয়। গ্রামবাসীরা এই বিশেষ দিনে গ্রামের ৭ টি পুকুরের জল এনে মন্দিরের রাখা মাটির মধ্যে ঢালা হয়। সেখানে কাদা তৈরি করে দাপাদাপি শুরু করেন গ্রামবাসীরা। সকাল থেকে শুরু করে বিকেল পর্যন্ত চলে এই খেলা। এদিন সকাল থেকেই জমে উঠেছিল ঝগড়াই গ্রামের কাদা খেলা। কচিকাঁচা থেকে শুরু করে বয়স্করাও মেতে উঠেছিলেন এই খেলায়।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, দুশো বছর ধরে চলে আসছে দশমীতে কাদা ছোড়ার এই অদ্ভূত রীতি। তাদের বিশ্বাস, এই কাদায় মায়ের অপার আর্শীবাদ রয়েছে। এই মন্দিরের জল কাদা নিয়ে গিয়ে তাঁরা বাড়িতে ছিটিয়ে দেন। তাতে সুখ, সমৃদ্ধি, আসে পরিবারে।
এই কাদা খেলার ইতিহাস নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে মতভেদ রয়েছে। অনেকেই বলেন, এই কাদা খেলার সূচনা হয়েছিল মল্লরাজের আমল থেকে। শোনা যায়, বর্ধমানের রাজার সঙ্গে বিষ্ণুপুরের মল্ল রাজার মামলা-মোকদ্দমা লড়তে যাচ্ছিলেন রাজা রঘুনাথ সিং। জঙ্গল পেরনোর সময় একটি বাচ্চা মেয়ের মধ্যে মায়ের দর্শন পান তিনি। এরপরেই মামলা জিতে যান রাজা। পুরুলিয়ায় ফিরে এসে ওই জায়গায় শুরু করেন মা ঝগড়াই ভঞ্জনি উৎসব, তখন থেকেই এই কাদা খেলা হয়ে আসছে।