শিলিগুড়ি: ছোট থেকেই আকবর, সীতা নামে ডাকে সবাই। তাই একটা অভ্যাস হয়ে গিয়েছে। ফলে হঠাৎ নাম নিয়ে এত বিতর্কের পর ওই নাম ব্যবহারে সতর্ক সকলে। তবে সেটা মানতে নারাজ দুই সিংহ। রাজ্য বন দপ্তরের নির্দেশ মেনে সাফারির কর্মীরা তাদের অন্য নামে ডাকছেন ঠিকই, তবে সাড়া দেবে না বলে যেন মনস্থির করে নিয়েছে তারা। ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন বেঙ্গল সাফারির কর্মীরা। যাঁরা সিংহের দেখভাল করছেন তাঁরা তাদের পুরোনো নাম ছাড়া ডাকলে কাছে আসছে না। শুধু তাই নয়, খাবার পর্যন্ত নিচ্ছে না। এদিকে, খাবারের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের প্রোটিন জাতীয় ওষুধও দেওয়া হয় তাদের। তাই সময়মতো খাওয়াতে এবং সুস্থ রাখতে আপাতত পুরোনো নাম ধরেই ডাকতে হচ্ছে সিংহ দুটিকে বলে জানা গিয়েছে। রাজ্য জু অথরিটির সদস্য সচিব সৌরভ চৌধুরীর কথায়, ‘আদালতে মামলা চলছে তাই নাম পরিবর্তন নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে পারব না। তবে ওই দুই সিংহ ভালো আছে।’
সাফারির কর্তারা জানিয়েছেন, বেঙ্গল সাফারির পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিচ্ছে তারা। সব ঠিক থাকলে এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহ থেকেই সাফারি পার্কে সাধারণ মানুষ সিংহের দেখা পাবেন।
ত্রিপুরার সিপাহিজলা চিড়িয়াখানাতে জন্ম তাদের। ২০১৬ সালে সিংহ আকবর এবং সিংহী সীতার ২০১৮ সালে জন্ম হয়েছিল। সেখানেই তাদের নামকরণ করা হয়েছিল বলে দাবি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের। এরপর ধীরে ধীরে ওই চিড়িয়াখানায় বড় হয়ে ওঠা তাদের। তাই ছোট থেকেই ওই দুই নামে সাড়া দিতে অভ্যস্ত তারা। এরপর কিছুদিন আগে তাদের অ্যানিমাল এক্সচেঞ্জ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে শিলিগুড়ির বেঙ্গল সাফারি পার্কে নিয়ে আসা হয়। কিন্তু এরাজ্যে আসার পরই ওই নাম নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়। এই নিয়ে প্রশ্ন তুলে হাইকোর্টে রিট পিটিশন দাখিল করে বিশ্ব হিন্দু পরিষদ। মামলার শুনানিতে বিচারপতি নিজে নাম নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেন। মামলাটি শুনানির জন্যে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চে পাঠিয়ে দেন। সেখানে জনস্বার্থ মামলা হিসেবে ওই মামলার শুনানি হবে। ওই মামলার রায় দেওয়ার সময় বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, অবিলম্বে সিংহ দুটির নাম পরিবর্তন করা প্রয়োজন। এরপর পুরোনো নাম যাতে কোথাও ব্যবহার না হয় সেই বিষয়টি সাফারির কর্তাদের দেখতে বলে রাজ্য বন দপ্তর। আর সেখানেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। পুরোনা নাম ছাড়া অন্য নামে ডাকলে সাড়া দিচ্ছে না বেঙ্গল সাফারিতে সদ্য আগতরা। ফলে তাদের সামাল দিতে ঘাম ছুটছে সাফারির কর্মীদের।