জলপাইগুড়ি: অভিনয় করার নেশায় দুই অ্যাথলিট পাড়ি দিয়েছিল কলকাতায়। প্রথমে টালিপাড়া। তারপর সল্টলেক সেক্টর ফাইভে। অভিনয় করার ভূত এমনভাবে মাথায় চেপেছিল যে হাতখরচের টাকা বাঁচিয়ে মাত্র ১৫০০ টাকা, প্রয়োজনীয় নথি ও কিছু জামাকাপড় নিয়েই কলকাতাগামী ট্রেন ধরে অনেক স্বপ্ন নিয়ে দুই বান্ধবী ২৫ এপ্রিল রওনা দেয়। অবশেষে ৯ দিনের মাথায় নিজে থেকে বাড়িতে ফিরে আসায় হাঁফ ছেড়ে বাঁচে ওই দুই নাবালিকার পরিবার। রবিবার দুই পরিবারের তরফে তাদের নিয়ে আসা হয় কোতোয়ালি থানায়।
নাবালিকাদের একজনের বাড়ি জলপাইগুড়ি (Jalpaiguri) পুরসভা এলাকায়। অপরজনের বাড়ি মণ্ডলঘাট গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। দুজনই দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী। তারা শহরের দুটি পৃথক স্কুল থেকে এ বছর উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষা দিয়েছে। তাদের দুজনের পরিচয় খেলার মাঠে অনুশীলন করতে গিয়ে বলে পরিবার সুত্রে জানা গিয়েছে।
গত ২৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার খেলার অনুশীলনের নাম করে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিল। তারপর আর তাদের কেউই বাড়ি ফেরেনি। দুই পরিবারের তরফে এরপর কোতোয়ালি থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। শেষপর্যন্ত তারা সুস্থ শরীরে ফিরে আসায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলল দুই বাড়ির লোকজন।
মণ্ডলঘাট এলাকার নাবালিকা জানায়, খেলার পাশাপাশি অভিনয়ের খুব শখ তার। সে মাঝেমধ্যেই রিলসও বানাত। সেই কথা বান্ধবীকেও জানায়। এরপর ইন্টারনেটে সার্চ করে বের করে অভিনয়ের জন্য স্টুডিও কোথায় আছে। খোঁজ পায় টালিগঞ্জের। এরপরই সাতপাঁচ না ভেবে তারা রওনা দেয় টালিগঞ্জের উদ্দেশে। শিয়ালদা থেকে লোকাল ট্রেনে চেপে টালিগঞ্জে পৌঁছে লাভের লাভ কিছুই হয়নি। এরপর ওই দুই নাবালিকা খোঁজ পায় সল্টলেকের। সেখানেও যায় যদি কোনও সুযোগ পায়, এই ভেবে। পরে বাড়ির লোকজনকে সঙ্গে নিয়ে আবার আসবে, এই ভেবেই নিজের বাড়ি ফিরে আসে।
অন্যদিকে জলপাইগুড়ি পুরসভা এলাকার ওই নাবালিকা জানায়, ‘বান্ধবীর ইচ্ছে অভিনয় করার। ভেবেছিলাম গিয়ে দেখি যদি কিছু হয়। তাই বাড়িতে কিছু না বলেই চলে গিয়েছিলাম।’ রাতে কোথায় থাকতে প্রশ্ন করতেই সে জানায় একদিন সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে ও বাকি দিনগুলোতে মহিলাদের ওয়েটিং রুমে। আর তারা কেক-বিস্কুট খেয়ে নাকি কাটিয়েছে অর্ধেক সময়।
এদিন জলপাইগুড়ি কোতোয়ালি থানায় দাঁড়িয়ে ওই দুই নাবালিকার অভিভাবকরা জানান, কোথা থেকে কী হল, বুঝতে পারলাম না। ভাগ্যিস ওদের কোনও বিপদ হয়নি।
