শিলিগুড়ি: মহানন্দায় নজরদারি নিয়ে এবারে বাকযুদ্ধে জড়াল বিহারি সেবা সমিতি ও মহানন্দা বাঁচাও কমিটি। গত বছরের শেষ দিকে সূর্য সেন পার্কের পিছনে পৌষমেলা বসেছিল। গত ২ জানুয়ারি সেই মেলা শেষ হয়। কিন্তু মেলা শেষের প্রায় তিন সপ্তাহ পরও মহানন্দার চরজুড়ে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রয়েছে আবর্জনা। এমনই অভিযোগ তুলে সাফাই অভিযানে নামল বিহারি সেবা সমিতি। এদিকে, পৌষমেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদিকা জ্যোৎস্না আগরওয়াল আবার মহানন্দা বাঁচাও কমিটিরও সাধারণ সম্পাদিকা। মূলত তাঁকেই নিশানা করে বিহারি সেবা সমিতির সদস্য মণীশ বারির অভিযোগ, ‘পৌষমেলায় এক-দুজন পরিবেশপ্রেমী রয়েছেন। তাঁরা বছরের এগারো মাস মহানন্দার কথা বললেও পৌষমেলার মাসে মহানন্দার কথা ভুলে যান। খাতায়-কলমে পরিবেশপ্রেমের কথা না বলে আমাদের মতো রাস্তায় নেমে মহানন্দার ঘাট সাফাইয়ে হাত লাগানো উচিত।’
এপ্রসঙ্গে পালটা জ্যোৎস্নাদেবীর দাবি, ‘মেলা শেষ হওয়ার পর আমরা চর সাফাই করেছিলাম। তবে ওখানে দৈনিক আবর্জনা জমা হয়ে গোটা চরে ছড়িয়ে পড়েছে।’ বিহারি সেবা সমিতির কাছে জ্যোৎস্নার প্রশ্ন, ‘নদীর চর দখল হচ্ছে। এর প্রতিবাদ করুন। চর এলাকায় স্থানীয় এক নেতা ঠ্যালাগাড়ি বসিয়ে দখল করতে গিয়েছিল। আমরা গ্রিন ট্রাইবিউনালের নির্দেশ নিয়ে এসে সেটা বন্ধ করাতেই কিছু মানুষের ঈর্ষা তৈরি হয়েছে।’ এব্যাপারে স্থানীয় তৃণমূল নেতা মনোজ ভার্মার বক্তব্য, ‘যারা ছটপুজোর সময় পুণ্যার্থীদের নানাভাবে হেনস্তা করে, তারাই মেলা করার সময় মহানন্দা বাঁচানোর আন্দোলন থামিয়ে দেয়। ওদের তো আরও বড় দায়িত্ব মেলা শেষে ওই চর পরিষ্কার করে দেওয়া।’
প্রসঙ্গত, গ্রিন ট্রাইবিউনালের নির্দেশ জারির পর থেকেই ছটপুজোর সময় লালমোহন মৌলিক ঘাটে উদ্যোক্তাদের সঙ্গে মহানন্দা বাঁচাও কমিটির বাকবিতণ্ডা নজরে পড়েছে। ওই কমিটির সদস্যদের একাংশ পৌষমেলা কমিটিরও সদস্য। ফলে, মেলার পর সাফাইয়ের দিকে কড়া নজর রেখেছিল বিহারি সেবা সমিতি। মণীশের বক্তব্য, ‘মহানন্দা শুধু লালমোহন মৌলিক ঘাট পর্যন্তই নয়, তার বাইরেও মহানন্দা রয়েছে। মেলার জন্য যে অস্থায়ী শৌচালয় করা হয়েছিল, সেটাও ভরাট করা হয়নি।’ জোৎস্নার কথায়, ‘ছটপুজোর সময় নদীতে ফেলা বস্তাগুলি এখনও ওঠানো হয়নি। সমিতির সদস্যরাও এব্যাপারেও নজর দিক।’