জলপাইগুড়ি: খোদ জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দপ্তরে ম্যালেরিয়া রোগ নিরোধক প্রকল্পের অঙ্গ স্বরূপ গাপ্পি মাছ চাষের প্রকল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে। বিপুল অঙ্কের টাকা খরচ করে ২০০২ সালে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দপ্তরের সামনে গভীর জলাধার নির্মাণ কোড়া হয়েছিল। গাপ্পি মাছের চাষের জন্য। বর্তমানে সেই দুটি ট্যাংকে আবর্জনা ছেয়ে গেছে। সন্ধ্যের পর ট্যাংক দুটি থেকে মশার পাল মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দপ্তর চত্ত্বর ছেয়ে ফেলছে। বর্ষায় ট্যাংক দুটি আদর্শ ব্যাঙাচি চাষে পরিণত হয়।
জলপাইগুড়ি(Jalpaiguri) জেলা রাজ্যের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ম্যালেরিয়া(Malaria) প্রবণ জেলা। এই জেলাতে বর্তমানে ম্যালেরিয়াতে মৃত্যুর হার কমলেও আগে প্রতি বছর ৫০ জনেরও বেশি মানুষ মারা যাওয়ার নজির রয়েছে। ম্যালেরিয়া প্রতিরোধ কল্পে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। ধারাবাহিকভাবে জেলা ম্যালেরিয়া দপ্তর ম্যালেরিয়া নিবারণের প্রচার করছেন। কিন্তু প্রদীপের নীচেই অন্ধকার। যে পথ দিয়ে জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তার দপ্তরে ঢোকেন সেই পথেই গাপ্পি মাছের চাষের জন্য নির্মিত ট্যাংকার পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে ট্যাংকার নির্মাণের তবে কী প্রয়োজন ছিল? জেলাতে ২০০২ সালে ব্যাপক ম্যালেরিয়া হয়েছিল। সেইসময় জেলা ম্যালেরিয়া আধিকারিক হিসাবে দায়িত্বে ছিলেন ডাক্তার বিক্রমজিৎ বসুমাতা। ডঃ বসুমাতা বিশেষ চেষ্টা করে জলপাইগুড়িতে গাপ্পি মাছের চাষের ব্যবস্থা করেন। প্রকল্পটির সার্থকতার শীর্ষে পৌঁছে যায়। পরবর্তীতে ডঃ বসুমাতা ম্যালেরিয়া বিভাগ থেকে অন্য বিভাগে বদলি হন। তারপর থেকেই এই গাপ্পি মাছের ট্যাংকার জঙ্গলাবৃত্ত হয়ে পড়ে রয়েছে।
ট্যাংকারের সামনে উপস্থিত হতেই সদ্য অবসরপ্রাপ্ত জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দপ্তরের এক কর্মী জানান, এসব নিয়ে লেখালেখি করে কি লাভ! কারও বিষয়টি চোখে পড়ে না। এটাই দুর্ভাগ্যজনক।
জলপাইগুড়ি রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতি বিধায়ক ডঃ প্রদীপ বর্মা বলেন, ‘বিষয়টি সম্পর্কে তিনি খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।‘ জেলার এক নম্বর উপ মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ ত্রিদিব দাস বলেন, ‘তারা ম্যালেরিয়া নিবারণের জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে গাপ্পি মাছ ক্রয় করছেন। রোগ প্রবণ এলাকায় সেই মাছ সরবরাহ করা হচ্ছে। জেলা মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের সামনে গাপ্পি মাছের ট্যাংক নির্মাণের বিষয়টি পলিসি ম্যাটার। এ ব্যাপারে মন্তব্য করব না।‘
জলপাইগুড়ি সায়েন্স অ্যান্ড নেচার ক্লাবের সম্পাদক ডঃ রাজা রাউত বলেন, ‘পরিকল্পিত উপায়ে ম্যালেরিয়া রোগ নিবারণের পদক্ষেপ গ্রহণ করা উচিত। জলপাইগুড়ি মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের দপ্তরে সামনে ট্যাংকার দুটির উপযুক্ত ব্যবহার করা জরুরি।‘