বর্ধমান: এ যেন সিনেমা! তিন তিনটে নাকি বিয়ে। আর এবার নিজেদের স্ত্রী হিসাবে দাবি করে অধিকারের দাবিতে একসঙ্গে ধর্না দিলেন দুই মহিলা। শুক্রবার এমনই ঘটনা ঘটল পূর্ব বর্ধমানের কালনার ধর্মডাঙা এলাকায়। স্থানীয় শুভঙ্কর হালদারের বাড়িতে ধর্নায় বসেন দুই মহিলা। যদিও শুভঙ্করের দাবি, তাঁকে ফাঁসাতেই পরিকল্পনা করে দুই মহিলা এমন নাটক করছেন।
ধর্নায় বসে চামেলি হালদার নামে এক মহিলা নিজেকে শুভঙ্করের স্ত্রী বলে দাবি করে জানান, তাঁদের ৯ বছরের একটি ছেলে ও ১৬ বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। তবু তাঁর স্বামী শুভঙ্কর তাঁদের খেতে, পড়তে দিতেননা। কাজের নাম করে বেশিরভাগ দিন তিনি বাইরে থাকতেন। চামেলিদেবীর অভিযোগ, তাঁর স্বামী তিনটি বিয়ে করেছেন। বিভিন্ন জায়গায় সংসার পেতে থাকেন। সেইসব প্রমাণ নিয়েই তিনি এসেছেন সন্তানদের ভবিষ্যৎ গড়ে দেওয়ার দাবি জানাতে।
অন্যদিকে, কাকলি নামে অপর মহিলা নথি দেখিয়ে দাবি করেন, শুভঙ্কর তাঁকে রেজিস্ট্রি করে বিয়ে করেছেন। বাবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে বলে জানিয়ে শুভঙ্কর ৫ লক্ষ টাকা চান। বাড়ি বন্ধক রেখে তিনি সেই টাকা শুভঙ্করকে দিয়েছে। মহিলার অভিযোগে, আগের স্ত্রীর সঙ্গে ডিভোর্স হয়ে গিয়েছে বলে রেজিস্ট্রি বিয়ের আগে শুভঙ্কর জানিয়েছিল। অথচ শুভঙ্কর এখন তাঁর সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে চাইছেন না। শুভঙ্কর এখন অন্য একটি মহিলার সঙ্গে প্রেমে মজেছে। সমস্ত টাকা দিয়ে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে ঘরে তোলার দাবি জানান মহিলা।
সমস্ত অভিযোগ প্রসঙ্গে শুভঙ্করের সাফাই, ‘দু’জনের একজন আমার বিবাহিত স্ত্রী ঠিকই, তাঁর সঙ্গে ৪ বছর সংসার করেছি।’ তাহলে এখন কেন ওই মহিলাকে নিয়ে সংসার করছেন না? এর উত্তরে শুভঙ্কর বলেন, ‘আমি না থাকাকালীন ওই মহিলা আমার পরিবারের সকলের নামে মামলা করেছে।’ অপর মহিলার সঙ্গে কী সম্পর্ক? তার উত্তরে শুভঙ্কর বলেন, ‘ওই মহিলা কালনার কদমতলায় থাকেন। উনি আমার মতো বেশ কয়েকজনকে ফাঁসিয়েছেন। এর জন্য অনেকে আত্মহত্যাও করেছেন।’ কাকলির দেখানো বিয়ের রেজিস্ট্রির নথির সত্যতা স্বীকার করে শুভঙ্করের সাফাই, ‘আমাকে ফাঁসিয়েছে।’ সব শুনে এলাকার পঞ্চায়েত সদস্য প্রদীপ মন্ডলের বক্তব্য, ‘আইনের দরবার ছাড়া এর বিচার সম্ভব নয়।’