উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ (Under-19 World Cup 2024) দক্ষিণ আফ্রিকাকে (South Africa) হারিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল ভারত (India)। ৪ রানের জন্য শতরান হাতছাড়া শচীন ধাসের। শচীনের ৯৬ রানের ঝকঝকে ইনিংস দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে তাদেরই বিশ্বকাপে বিদায়ের ঘন্টা বাজিয়ে দিল। ৮১ রান করে অধিনায়কের ইনিংস খেললেন উদয় সাহারান। বল হাতে ৩ উইকেটের পাশাপাশি দুর্ধর্ষ ব্যাট করেন ভারতের রাজ লিম্বানি। জয়ের রানও এল তাঁর ব্যাটে। এই তিন জনের কাঁধে চেপে ভারত পৌঁছে গেল ফাইনালে।
এদিন টসে জিতে প্রথমে দক্ষিণ আফ্রিকাকে প্রথমে ব্যাট করতে পাঠায় ভারত। বোলিংয়ের শুরুটা ভালই করেছিল তারা। দক্ষিণ আফ্রিকার মারকুটে ব্যাটার স্টিভ স্টোক মাত্র ১৪ রান করেই আউট হয়ে যান। ডেভিড টিগার শূন্য রানে আউট হন। পরপর দুটি উইকেট পড়ে যেতেই দলের হাল ধরেন লুয়ান দ্রে প্রিটোরিয়াস ও রিচার্ড সেলেৎসোয়ানে। দু’জনে মিলে ধরে ধরে রান এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। ভারতীয় স্পিনারদের কাছে দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটারদের অসহায় দেখাচ্ছিল। ওভার কমতে থাকলেও হাত খুলে মারার প্রবণতা দেখা যায়নি প্রোটিয়া ব্যাটারদের। বিশেষ করে সেলেৎসোয়ানে খুব ধীরে খেলছিলেন। ১০ রান করতেই তিনি খেলেন ৪০ বল। এরমাঝেই সিঙ্গলসের ওপর ভর করে অর্ধশতরান করেন প্রিটোরিয়াস। এরপরই একটু হাত খুলে খেলার চেষ্টা করেন তিনি। দেখাদেখি কয়েকটি বড় শট মারেন সেলেৎসোয়ানেও। কিন্তু বেশি আক্রমণাত্মক হতে গিয়ে ৭৬ রানের মাথায় আউট হন প্রিটোরিয়াস। সেলেৎসোয়ানে ১০০ বলে ৬৪ রানের ইনিংস খেলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ২০০ রানে পৌঁছে দেয়। অলিভিয়ের হোয়াইটহেড ২২ রান করেন। অধিনায়ক জুয়ান জেমস ১৯ বলে ২৪ ও ট্রিস্টান লুস ১২ বলে ২৩ রান করেন। ভারতের রাজ লিম্বানি নেন ৩ উইকেট। পেসার নমন তিওয়ারি নেন ১ উইকেট। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৪৪ রান করে দক্ষিণ আফ্রিকা।
২৪৫ রানের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ব্যাট করতে নামেন অনূর্ধ্ব-১৯ ভারত। রান তাড়া করতে গিয়ে ধস নামে ভারতের ব্যাটিং লাইন আপে। ৩২ রানেই ভারতের পড়ে যায় ৪ উইকেট। দক্ষিণ আফ্রিকার দুই পেসার ট্রিস্টান লুস ও কোয়েনা মাফাকার বিধ্বংসী বোলিংয়ের সামনে দাঁড়াতেই পারলেন না আদর্শ সিংহ, আর্শিন কুলকর্নি, মুশির খান ও প্রিয়াংশু মোলিয়া। সেই সময়ই মাঠে নামেন শচীন ধাস। ঠান্ডা মাথায় ইনিংসের রাশ ধরলেন অধিনায়ক উদয় সাহারান ও শচীন। তাড়াহুড়ো করলেন না। এদিন উদয়ের থেকে বেশি আক্রমণাত্মক দেখাচ্ছিল শচীনকে। তিনি পাল্টা আক্রমণের পথে যান। কয়েকটি বড় শট খেলে রান তোলার গতি স্বাভাবিক রাখেন। এক বার লুস ও মাফানা আক্রমণ থেকে সরে যাওয়ার পরে বোলারদের নিশানা করলেন দুই ব্যাটার। এরমাঝেই অর্ধশতরান করে ফেলেন শচীন। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ভারতের রানের গতি। শচীনের পরে অর্ধশতরান করেন উদয়ও।
বাধ্য হয়ে ফের আক্রমণে আসে প্রতিযোগিতার সর্বাধিক উইকেটের মালিক মাফাকা। তিনি এসে প্রথম বলেই ফেরান শচীনকে। ১১টি চার ও একটি ছক্কা মেরে ৯৫ বলে ৯৬ রান করে ফেরেন তিনি। ভেঙে যায় অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের ইতিহাসে পঞ্চম উইকেটে সর্বাধিক (১৭১) রানের জুটি। তখনও জিততে দরকার ছিল ৪২ রান। বাকি দায়িত্বটা নেন উদয়। অন্য প্রান্তে উইকেট পড়লেও তাঁকে আউট করা যাচ্ছিল না। কঠিন সময়ে লিম্বানি একটি ছক্কা মেরে কাজটা সহজ করে দেন। ভারতের জিততে যখন এক রান দরকার তখন তাড়াহুড়ো করতে গিয়ে রান আউট হয়ে যান উদয়। তাতে অবশ্য জয় আটকায়নি। পরের বলেই চার মেরে দলকে জিতিয়ে দেন লিম্বানি।