সৌম্যজ্যোতি মণ্ডল, চাঁচল: উত্তর মালদা লোকসভা কেন্দ্রের চাঁচল একসময় ছিল কংগ্রেসের দুর্ভেদ্য ঘাঁটি। বাম জমানায় তো বটেই, রাজ্যে পালাবদলের পরেও ২০১৬ পর্যন্ত চাঁচলে রাজনীতির চালিকাশক্তি ছিল কংগ্রেসের হাতে। কিন্তু আঠারোর পঞ্চায়েত ভোট থেকেই বদলাতে শুরু করে সেই রাজনৈতিক সমীকরণ। একুশের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো ঘাসফুল ফোটে চাঁচলে। দ্বিতীয় রাজনৈতিক শক্তি হিসাবে উত্থান হয় বিজেপির। কিন্তু রাজনীতির পালাবদল ঘটলেও চাঁচলের বিভিন্ন এলাকায় পরিস্থিতির খুব একটা পরিবর্তন হয়নি।
রাজ্যে একমাত্র চাঁচলেই দু’বার ঘোষণার পরও চালু হয়নি পুরসভা। তৃণমূল সেই স্বপ্ন দেখিয়ে ভোটে জিতলেও আশ্বাস পূরণে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এদিকে, মহকুমা সদর চাঁচলে দিনের পর দিন বাড়ছে জনসংখ্যা। বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক দপ্তর, আদালত, কলেজ, সুপারস্পেশালিটি হাসপাতাল হয়েছে। তবে পুরসভা না হওয়ায় সঠিক পরিকল্পনার অভাবে থমকে রয়েছে উন্নয়ন। নিকাশি, রাস্তা, পথবাতি, বাসস্ট্যান্ড, ট্রাফিক ব্যবস্থা থেকে শুরু করে একাধিক সমস্যায় জর্জরিত চাঁচল। এলাকাবাসী বলছেন, এবারের ভোটে এর বড় প্রভাব পড়বে।
চাঁচলের বাসিন্দা দীপক চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘রাজ্যের বর্তমান শাসকদল পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে বিধানসভায় ক্ষমতা থাকলেও চাঁচলে উন্নয়নের দিশা দেখাতে ব্যর্থ।’
সাম্প্রতিককালে পঞ্চায়েতস্তরে ব্যাপক দুর্নীতি হয়েছে এই বিধানসভা এলাকায়। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধা থেকে বঞ্চিত প্রকৃত উপভোক্তারা। অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে কাটমানি। রাজনৈতিক মহল মনে করছে, এরও একটা বড় প্রভাব পড়তে পারে ইভিএমে।
চাঁচলের যুবক শোভিত দাস বলেন, ‘পড়াশোনা করেও এলাকায় কাজ নেই। অসুস্থ হলে ভালো চিকিৎসার ব্যবস্থা নেই। কিছু জায়গায় জলের ব্যবস্থা আর রাস্তা ছাড়া আমরা কিছু পাইনি।’ পেশায় কৃষক মহম্মদ হোসেনের বক্তব্য, ‘যেটুকু কাজ হয় তার মধ্যেও দুর্নীতি। শাসক বদলেছে। কিন্তু সমস্যার সমাধান হয়নি।’
যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বর বক্তব্য, এলাকায় উন্নয়নের বিষয়ে বেশ কিছু পদক্ষেপ করা হয়েছে। আরও যাতে উন্নয়ন করা যায়, সেবিষয়ে সরকার চেষ্টা করছে।