বর্ধমান: পুলিশকর্মীর বাড়ির পর এবার দেবতার মন্দিরে হানা দিল দুষ্কৃতীরা। পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রামের এক পুলিশকর্মীর বাড়িতে শনিবার গভীর রাতে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। তার পর ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে এই জেলারই মঙ্গলকোটের(Mangalkot) একটি মন্দিরে হানা দিয়ে দুটি প্রচীন বিষ্ণুমূর্তি নিয়ে চুরি(Theft) করে চম্পট দিল দুষ্কৃতীরা। যা নিয়ে সোমবার সকাল থেকে ক্ষোভে ফুঁসছেন মঙ্গলকোটের খেড়ুয়া গ্রামের বাসিন্দারা। গ্রামবাসীদের অনুমান, রাতে অন্ধকারে মন্দিরের দরজার তালা ভেঙে প্রাচীন বিষ্ণুমূর্তি চুরির ঘটনায় প্রত্নসামগ্রী পাচারচক্রের লোকজন জড়িত থাকতে পারে। মঙ্গলকোট থানার পুলিশ মূর্তি চুরির ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে ঠিকই। তবে সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত পুলিশ মূর্তি চুরির ঘটনার কিনারা করতে পারেনি বলে জানা গিয়েছে।
ইতিহাস অনুযায়ী, পূর্ব বর্ধমান জেলার প্রাচীন জনপদগুলির মধ্যে অন্যতম মঙ্গলকোট। এখনও এই এলাকায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে প্রচুর প্রাচীন স্থাপত্যের ধ্বংসাবশেষ। রয়েছে দুটি সতীপীঠ সহ প্রাচীন মন্দির। এমন এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হওয়া অজয় নদের জল কমলে দেবদেবীর প্রাচীন মূর্তি উদ্ধার হয় নতুন কোনও ঘটনা নয়। গ্রামবাসীদের নজরে পড়লে সেইসব মূর্তি উদ্ধার হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা সংরক্ষণের উদ্যোগও নেওয়া হয়। কিন্তু গ্রামবাসীদের চোখ এড়িয়ে কোনও মূর্তি প্রত্নসামগ্রী পাচারকারীর হাতে পড়ে গেলে তা গায়েব হয়ে যায় বলে অভিযোগ।
খেড়ুয়া গ্রামের বাসিন্দারা জানান, ১৯৮৬ সালে আমাদের গ্রামের বাসিন্দাদের হাত ধরে পাল ও সেন সমসাময়িক যুগের দুটি বিষ্ণুমূর্তি উদ্ধার হয়। তারপর থেকে ওই দুটি মূর্তি গ্রামের একটি মন্দিরে স্থান পায়। মন্দিরে ওই দেবতার নিত্যসেবাও হয়। অনান্য দিনের মত রবিবার সন্ধ্যাতেও সন্ধ্যারতি সম্পূর্ণ করে মন্দিরে তালা বন্ধ করে চলে যান পুরোহিত। তার পর শীতের রাতে কোনও সময় ওই মন্দিরে হানা দেয় দুষ্কৃতীরা। এদিন সকালে গ্রামবাসীরা দেখতে পান মন্দিরের দরজার তালা ভাঙা। সেই দেখে মন্দিরের ভিতরে ঢুকতেই গ্রামবাসীরা দেখতে পান মন্দিরে থাকা দুটি বিষ্ণুমূর্তি উধাও হয়ে গিয়েছে। এদিকে মন্দির থেকে দুটি প্রাচীন বিষ্ণুমূর্তি চুরি হয়ে যাওয়ার কথা গ্রামবাসীরা স্তম্ভিত হয়ে যান। বহু গ্রামবাসী মন্দিরে ছুটে যান। খবর পেয়ে মঙ্গলকোট থানার পুলিশও মূর্তি চুরির ঘটনার তদন্তে যায়।