উত্তরবঙ্গ সংবাদ ডিজিটাল ডেস্কঃ রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন পর্বে অশান্ত হয়েছিল বাংলা। রাজনৈতিক হিংসার বলি হয়েছে কমপক্ষে ৪৫ জন। নির্বাচন পর্ব মিটে গেলেও অশান্তি অব্যাহত রয়েছে ভাঙ্গড়ে। গণনার পরেও প্রাণ গিয়েছে ৩ জনের। গুলিবিদ্ধ এক পুলিশকর্তাও। ভোটপর্ব শেষ হওয়ার পরদিনই নবান্নে পা রেখেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার নবান্নে মমতা দাবি করেছেন সব জায়গায় অশান্তি হয়নি। শুধু দু’টি জেলায় হয়েছে। মুর্শিদাবাদ ও মালদহ জেলায় কিছুটা ঘটনা ঘটেছে। মমতার এই দাবির তীব্র বিরোধীতা করেছে প্রায় প্রতিটি রাজনৈতিক দল।
ভোট-হিংসা নিয়ে বারবার রাজ্য সরকার ও রাজ্য নির্বাচনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা। বুধবার নবান্নের সভাঘর থেকে সাংবাদিক বৈঠক করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন বিরোধীদের অভিযোগ নিয়ে বলতে গিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন, ‘৬০ হাজারের বেশি বুথে ভোট হয়েছে। তারমধ্যে বড়জোর ৬০টি বুথে বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে। আমি দুঃখিত রাম-বাম-শ্যাম ও আর একজন জোট বেঁধেছিল। প্ল্যান করে করেছে। ভোট ঘোষণার পর থেকে এখনও পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। সব মৃত্যুই দুঃখজনক। আমি শুধু নিজের দলের কথা বলছি না। তবে এই ১৯ জনের মধ্যে আমাদের দলেরই ১০-১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সব জায়গায় অশান্তি হয়নি। শুধু দু’টি জেলায় হয়েছে। মুর্শিদাবাদ ও মালদহ জেলায় কিছুটা ঘটনা ঘটেছে। আমি দুঃখিত কয়েকজন মারা গেছে বলে। আপনারা দেখবেন যে জায়গাগুলোতে অশান্তি হয়েছে, সেখানে ২০-২৫ বছর ধরে চিরাচরিতভাবে গন্ডগোল হয়ে আসছে। আমি পুলিশকে ফ্রি হ্যান্ড দিচ্ছি। কাউকে রেয়াত করা হবে না।’
মমতা আরও বলেন, ‘কোর্ট যা নির্দেশ দিয়েছে সব মেনেছি। ৭০০ বুথে পুনর্নির্বাচন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কমিশন, আমরা তাতেও সায় দিয়েছি। ভোটের বাক্সে জল ঢেলে দিয়ে সাধারণ মানুষের ভোট নষ্ট করা হয়েছে। কমিশন কেন তাঁদের গ্রেপ্তার করল না।’
ভোটপর্ব মিটলেও অশান্তি অব্যাহত ভাঙড়ে। রাতে গণনার শেষ পর্ব থেকে নতুন করে অশান্ত ভাঙড়ে মৃত্যু হয়েছে দুই আইএসএফ কর্মী ও স্থানীয় এক যুবকের। প্রসঙ্গে এদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “কাউন্টিং হওয়ার পরও ভাঙড়ে যে জমায়েত হল, সেটা না হলেই ভাল হত। অ্যকশন হবে। তবে ভোটে যেটুকু হিংসার ঘটনা ঘটেছে, আগামীদিনে চেষ্টা করব সেটুকুও যাতে না ঘটে। আমরা প্রশাসনিকভাবে ৯০ শতাংশ সফল হয়েছি, ১০ শতাংশ ব্যর্থ।”
সবমিলিয়ে ভোট ঘোষণা হওয়ার পর থেকে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে রাজনৈতিক সংঘর্ষে মৃত্যু হয়েছে ৪৮ জনের। ভোট পর্বে রাজনৈতিক হিংসায় আইন শৃঙ্খলার অবনতির প্রশ্নে জনস্বার্থ মামলাও হয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। ওই মামলার শুনানি হয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। ‘আইন শৃঙ্খলার সামলাতে রাজ্য সরকার সম্পূর্ন রূপে ব্যর্থ’ বলেও মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি।